ফাইল ছবি
নন্দন দত্ত ও গোবিন্দ রায়: সেদিন রাতের ঘটনা এখনও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে কিয়ান শেখকে। তাই কাকিমা নাজেমা বিবির হত্যাকারীদের ফাঁসির সাজা চায় বগটুইয়ের অগ্নিকাণ্ডের (Rampurhat Incident) প্রত্যক্ষদর্শী এই নাবালক।
আজ, সোমবার রামপুরহাট হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেই কাকিমা নাজেমার মৃত্যু সংবাদ পায় নাবালক কিয়ান। তার ডান হাত, শরীরের ডানদিক সেদিন অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দমকল বাহিনী গত সোমবার পশ্চিম পাড়ার ইদগাহের পাশ থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করেছিল। দু’দিন আগেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে সে। এদিন ছিল ফের শারিরীক পরীক্ষার দিন।
পুলিশি প্রহরায় তাকে মেডিক্যাল কলেজে আনা হয়। সেখানেই কিয়ান জানায়, সেদিন রাতে একই ঘরে সাত-আট জন ছিল তারা। ছিলেন কাকিমা নাজেমাও। রাত তখন ন’টা বেজে গিয়েছে। হঠাৎই তাদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বাজি আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটতে শুরু করে। কিছু বোঝার আগেই একটা আগুনের গোলা এসে তার শরীরের ডানদিকে লাগে। বাড়ি থেকে ছিটকে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে কিয়ান।
উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ বগটুই মোড়ে বোমা মেড়ে খুন করা হয় বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে। তারই জেরে সন্ধেয় একাধিক বাড়িতে হামলা চলে। কিয়ানের দাবি, সেদিন সে কয়েকজনকে চিনতে পেরেছিল। নিজের চোখে দেখেছে শেখ রস্তান, শেখ মফিজুলকে। তারা একের পর এক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে চলেছে। তারা দলে অনেকজন ছিল। ১০-১২টা বাড়িতে আগুন লাগে। হাসপাতালের বেডে শুয়েই সে শুনেছে পূর্ব পাড়ায় ঘরের ভিতর পুড়িয়ে মারা হয়েছে তার আত্মীয়দের। কিয়ান জানায়, “কাকিমাকে নাজেমাকে নিয়ে মোট ন’জনের মৃত্যু হল। এর আগে যারা মারা গিয়েছে, তারা সম্পর্কে আমার ছোট মা, নতুন মা, দাদি, চাচি, চাচাতো বোন হয়। আমি চাই তাদের শাস্তি হোক। তাদের ফাঁসি দিক আদালত।”
এদিকে, বগটুই গ্রামের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেও তার আগে উপপ্রধান ভাদু শেখের মৃত্যুর তদন্ত কার হাতে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করেনি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। তাই ভাদু শেখ মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। সোমবার তারই ব্যাখ্যা চেয়ে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। কংগ্রেসের তরফে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। মঙ্গলবার জরুরি ভিত্তিতে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.