Advertisement
Advertisement

Breaking News

Rampurhat

স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ! গোটা ঘরে বিদ্যুতের খোলা তারের বেড়ি দিল স্বামী

রামপুরহাট থানার পুলিশ বিদ্যুৎবাহী তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বিপন্মুক্ত করে ওই মহিলা ও তাঁর মেয়েকে।

Rampurhat man allegedly install illegal electric fence around his house
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 4, 2024 12:05 am
  • Updated:July 5, 2024 2:55 pm  

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: স্ত্রীকে গৃহবন্দি করতে ইলেকট্রিক তারের বেড়া দিয়ে গোটা ঘরে সুরক্ষা চক্র করে রেখেছিল স্বামী। গত একমাস ধরে এভাবেই রামপুরহাটের (Rampurhat) চাকলামাঠ এলাকায় স্ত্রী ও মেয়েকে বন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে রামপুরহাট থানার পুলিশ বিদ্যুৎবাহী তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বিপন্মুক্ত করে তাঁদের। স্বামী নাজির হোসেন জানান, “ঘর বাঁচাতে আমি এটা করতে বাধ্য হয়েছি।” রামপুরহাট থানার পক্ষ থেকে তাকে ডেকে পাঠানো হলেও সন্ধ্যে পর্যন্ত তিনি যাননি। গৃহবন্দি স্ত্রী মাজমা খাতুন জানান, “এমনিতে স্বামী ভালো। তবে মাঝে মাঝে বলে মাথার ডাক্তার দেখাব। আমার কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয় না।”

স্ত্রীকে আটকাতে সুরক্ষা চক্র রামায়ণের যুগ থেকে চলে আসছে। বনবাসে গণ্ডি দিয়ে সীতাকে আটকে রেখে গিয়েছিলেন রাম। বন্যপ্রাণীদের লোকালয়ে ঢুকে পরা আটকাতে রাতেরবেলা বিদ্যুৎবাহী তারের বেড়া দেওয়া হয় কিছু এলাকায়। কিন্তু জনবহুল এলাকায় পাড়ার মধ্যে স্ত্রীর প্রতি সন্দেহে তাঁকে বিদ্যুতের তার দিয়ে আটকে রাখা এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রামপুরহাটে। ১৩ বছর আগে নলহাটিতে মাজমার সঙ্গে নাজির হোসেনের বিয়ে হয়। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চাকলামাঠে দীর্ঘদিন ধরে থাকেন তাঁরা। বাবা সরকারি দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তাঁরই জমানো টাকায় সংসার চলে নাজিরের। তবু তিনি জানান,”মাঝে মাঝে ইলেকট্রিকের কাজ করি, গাড়িও চালাই।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: বিয়ের কথার পরেও সম্পর্ক থেকে বেরনোর চেষ্টা তরুণীর! লেক গার্ডেন্স গুলি কাণ্ডে রহস্য]

বাড়িতে নাবালিকা মেয়ে। মাস তিনেক আগে স্ত্রীকে অত্যাচারের অভিযোগে নাজিরকে ১৫ দিন জেলও খাটতে হয়েছে। সে মামলা চলছে। নাজিরের দাবি, “এসব তাঁর স্ত্রীর বুদ্ধিতে হয়নি। প্রতিবেশীরা তাঁকে উসকেছে। তাই প্রতিবেশীদের আটকাতে তিনি ঘরের চারিদিকে মাটিতে লোহার খোলা তারের বিদ্যুৎ দিয়ে রেখেছেন। যাতে তার অবর্তমানে ঘরে কেউ ঢুকতে গেলে শর্ট সার্কিটে মৃত্যু হয়।” বুধবার দুপুরে জনবহুল চাকলামাঠের নাজিরের বাড়ি গেলে দেখা যায় বিদ্যুৎবাহী তারে পৃষ্ট হয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাং ও সাপ মারা গিয়েছে। ঘরে ঢোকার মূল দরজা লোহার পাতের। উঁচু পাঁচিল। কিন্তু তার গোড়ায় ইলেকট্রিক তার ফেলা। তার স্ত্রী মাজমা বিবি জানান, “গত একমাস ধরে এই তার ফেলে রেখেছেন নাজির। সামনের দরজা বন্ধ দেখে একদিন মা ও মেয়ে মিলে ডাক্তার দেখানোর জন্য পিছনের গলি দিয়ে কোনওরকমে টপকে বাইরে যাই। পরেরদিন দেখি সেদিকেও লোহার খোলা তার ঝুলিয়ে দিয়েছে। বাইরের কলে জল আনতে গিয়ে সে সব দেখেই আমি ছুটে পালিয়ে আসি।”

নাজিরের অভিযোগ , “আমি বাড়িতে না থাকলেই আমার বাড়িতে লোক আসে। কখনও পাঁচিল টপকে। কখনও দরজা খুলে। বাড়ির দামি জিনিস চুরি যায়। এমনকী কাগজপত্রও চুরি গিয়েছে। মেয়ে বড় হচ্ছে। তাই নিজের সুরক্ষা নিজের কাছে। ইলেকট্রিক তার দিয়ে আমি ঘিরে রেখেছি ঘর।” প্রতিবেশীরা জানান, “আমরা আতঙ্কে ছিলাম। ওর বাড়িতে ছোট মেয়ে আছে, আমাদের পাড়াতেও কিছু ছোট ছেলে আছে। বাড়িতে আমের গাছ আছে। আম কুড়োতে গিয়ে যদি শর্ট সার্কিটে বিপদ হয়?” নাজিরের আরও দাবি, “এর আগে প্রতিবেশীদের নামে বহু অভিযোগ থানায় করেছি। স্ত্রীর স্বভাব চরিত্র নিয়ে করেছি। থানা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।” তবে গোটা ঘরে বিদ্যুতের তারের বেড়ি দেওয়া শুনেই পুলিশ ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা চাকলা মাঠে ফিরোজের বাড়িতে হানা দেন। তারা লোহার তারের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে এলাকাটিকে বিপন্মুক্ত করেন।

[আরও পড়ুন: শ্লীলতাহানি ইস্যুতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এবার সুপ্রিম কোর্টে ‘নির্যাতিতা’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement