বগটুই গ্রামে অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে সিবিআই। ফাইল ছবি।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দ্বিতীয় দিনে তদন্তে নেমে বগটুই গ্রামের অগ্নিদগ্ধ ঘর থেকে পুড়ে যাওয়া ধারাল অস্ত্র (Weapon) উদ্ধার করল সিবিআই (CBI)। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ তিন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান রেকর্ড করল। একইসঙ্গে পান্থশ্রী আবাসনে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে অভিযুক্ত আনারুল হোসেন ও আজাদ শেখকে পৃথক পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের বয়ান রেকর্ড করা হল। ওই আবাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য ৩৫ জনের কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সিবিআই, ডিআইজি অখিলেশ সিং জানিয়েছেন, ”তদন্তে সর্বস্তর থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা পাচ্ছি।”
রবিবারই পুলিশ হেফাজতে থাকা বগটুই (Bogtui) কাণ্ডের ধৃতদের সকালবেলা পান্থশ্রী আবাসনে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসে সিবিআই। অন্যদিকে, দুই সদস্যের একটি দল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে বার্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন চার প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান রেকর্ডের জন্য হাজির হয়। কিন্তু উপযুক্ত কাগজপত্র না থাকায় তাদের ওয়ার্ডে ঢুকতে দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে অখিলেশ সিং হাসপাতালের ওয়ার্ডে গিয়ে অগ্নিদগ্ধদের সঙ্গে কথা বলেন। উল্লেখ্য, হাসপাতালে সেই রাতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ভরতি আছেন নাজমা বিবি, আতাহারা বিবি, বুলবুলি খাতুন ও নাবালক ইরফান শেখ। নাজিমা বিবির অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, তাঁর শরীরের ৬৫ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ, ৩৫ শতাংশ দগ্ধ আতাহারা বিবির দেহ। দু’জনের বয়ান রেকর্ড সিবিআইয়ের কাছে খুব জরুরি ছিল। তদন্তকারী দল সেই রাতে হাসপাতালে থাকা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বিশেষ করে জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ফটিক শেখের বউ মীনা বিবি মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে কী বলেছিলেন, তা জানতে চান। কী অবস্থায় কখন তাকে আনা হয়েছিল। বয়ান রেকর্ডের পর বাইরে বেড়িয়ে অখিলেশ সিং জানান, ‘‘আমরা আমাদের কাজ করছি। তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সবাই খুব সহযোগিতা করছে।’’ পাশাপাশি সিবিআই ফরেনসিক দল ও তদন্তকারী দল বগটুই গ্রামে পুড়ে যাওয়া বাড়ি থেকে ফের নমুনা সংগ্রহ করে। অগ্নিদগ্ধ সোনাই শেখের বাড়ির ভিতর থেকে একটি ভোজালি ও একটি লোহার শাবল উদ্ধার করে। অন্যদিকে, সিবিআইয়ের অস্থায়ী আবাসন পান্থশ্রীতে ধৃত আনারুল হোসেন ও আজাদ শেখকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আজাদ শেখের নেতৃত্বেই সেদিন গ্রামে অশান্তি ঘটেছিল।
অগ্নিকাণ্ডে স্বজনহারা ব্যক্তিরা সাঁইথিয়া গ্রামের গোপালজোলা গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। মৃতের আত্মীয় মিহিলাল শেখ জানান, ”আমি সেদিনের ঘটনা খানিকটা দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখেছি। কারা জড়িত, কী হয়েছিল, সব জানি। আমি সিবিআইকে সাহায্য করব।” যদিও এদিন গোপালজোলা গ্রামে আসেননি তদন্তকারী দল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.