Advertisement
Advertisement

শ্রীনু খুনে মাথা রামবাবুই, দাবি পুলিশ সুপারের

পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হবে৷

Rambabu is responsible for Srinu’s murder, says Police Super
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 1, 2017 10:57 am
  • Updated:March 1, 2017 10:57 am  

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: রেলশহর খড়গপুরে রক্তপাত মানেই তার নাম জড়িয়ে যাওয়া৷ তা সে প্রাক্তন সাংসদ নারায়ণ চৌবের দুই ছেলের খুন হোক কিংবা অতি সাম্প্রতিক শ্রীনু নায়ডু খুন৷ সেই ট্রেন্ড বজায় থাকল এবারও৷ বাসব রামবাবু এবার শ্রীনু নায়ডু খুনে অভিযুক্ত৷ শ্রীনু খুনের তদন্ত যত এগিয়েছে, ততই ‘বড় মাথা’ হিসাবে সামনে এসেছে রামবাবুর নাম৷ মেদিনীপুর আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে তল্লাশিও চালাচ্ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ৷ অবশেষে সাফল্য মিলল মঙ্গলবার৷ ওইদিন দুপুরে অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী জেলার তানুকু থেকে খড়গপুরের ‘ডন’ রামবাবুকে গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা৷ বুধবার মেদিনীপুর আদালতে পেশ করা হয় রামবাবুকে৷ তার আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ জানান, শ্রীনু খুনে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে রামবাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ পুরনো সাম্রাজ্য ফিরে পেতেই শ্রীনু খুনের ছক কষে রামবাবু৷ এ নিয়ে আততায়ীদের সঙ্গে তার দু’টো বৈঠকও হয়৷ বাইরে থেকে ভাড়াটে খুনিও সে এনেছিল৷ গত ১১ জানুয়ারি রেলশহর খড়গপুরের নিউসেটেলমেন্ট এলাকায় তৃণমূল কার্যালয়ের ভিতরেই খুন হয় শ্রীনু নায়ডু ও তার সঙ্গী ধর্মা রাও৷ শ্রীনুর স্ত্রী পূজা ওই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলর৷ শ্রীনু একসময় খড়গপুরের ত্রাস ছিল৷ কিন্তু সমাজের মূলস্রোতে সে ফিরে আসে, ঘটনার পর দাবি করেছিল পুলিশ৷

আর তার জেরেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল৷ তখনই এই ঘটনায় খড়গপুরের একদা ত্রাস রামবাবুর নাম উঠে এসেছিল৷ কারণ, একসময় শ্রীনু ছিল রামবাবুর ঘনিষ্ঠ৷ তার পর শ্রীনুই হয়ে যায় রামবাবুর সবচেয়ে বড় ‘শত্রু’৷ তার পর রামবাবুকে সরিয়ে শ্রীনুই খড়গপুরের ‘ডন’ হয়ে উঠেছিল৷ শ্রীনু হত্যার পর পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ জানিয়েছিলেন, এর পিছনে বড় মাথা রয়েছে৷ তখনই এই কাণ্ডে রামবাবুর যোগের বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়৷

Advertisement

(মহিলা সাংসদের পরামর্শেই নেপাল পালাচ্ছিলাম, স্বীকারোক্তি জুহির)

এই ঘটনায় ১৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারলেও রামবাবু ছিল অধরাই৷ এর মধ্যে রামবাবু ঘনিষ্ঠ শংকর রাও রয়েছে৷ এছাড়া ধৃত নন্দ দাস এই ঘটনায় গোপন জবানবন্দি দিয়েছে৷ জানা গিয়েছে, এই গোপন জবানবন্দিতে নন্দ খুনের ঘটনায় রামবাবু জড়িত বলে জানিয়েছে নন্দ৷ এর পরই বিশেষ দল গড়ে শুরু হয় রামবাবুর সন্ধান৷ এ মাসের ২১ তারিখ মেদিনীপুর আদালতে রামবাবু ও তার ছায়াসঙ্গী কাশীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়৷ সাতদিনের মধ্যেই এই নির্দেশ কার্যকর করতে নির্দেশ দেন বিচারক৷ সেই হিসাবে মঙ্গলবারই ছিল আদালতের নির্দেশ কার্যকর করার শেষ দিন৷ মেয়াদ শেষের দিনই পুলিশের জালে রামবাবু৷

পুলিশ সুপার এদিন জানান, অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী জেলার তানুকু এলাকায় একটি পর্যটন কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল রামবাবু৷ একটি ভাড়ার ঘরে থাকত৷ সেখানে একটি বাসবী মন্দিরে পুজো করেই দিন কাটাচ্ছিল৷ তার কাছে কোনও ফোন ছিল না৷ ফলে তার খোঁজ পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠছিল৷ মঙ্গলবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রামবাবুর আস্তানায় হানা দেয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের ২২ জনের একটি বিশেষ দল৷ বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷

(রোগীর মৃত্যুর জেরে মারধর, নার্সিংহোমে কাজ বন্ধ ডাক্তারদের)

খড়্গপুরের ‘ডন’ রামবাবু পুলিশের হাতে আগেও একাধিকবার ধরা পড়েছে৷ রেল শহর খড়গপুরের মাফিয়া ডন বাসব রাও রামবাবুকে ২০০১ সালে কংগ্রেস নেতা গৌতম চৌবেকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়৷ এই মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা হয়৷ পরে অবশ্য ২০১০ সালে তার জামিন হয়৷ রামবাবুর দীর্ঘ কারাবাসের সুবাদে শ্রীনুই হয়ে ওঠে খড়গপুরের ‘ডন’৷ এর পর গত বছরে খড়গপুরের গোলবাজারে এক গন্ডগোলে ফের গ্রেপ্তার করা হয় রামবাবুকে৷ জামিনে মুক্তি পেলেও আদালত নির্দেশ দেয় যে, রামবাবুকে খড়গপুর ছেড়ে চলে যেতে হবে৷ পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হবে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement