শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: শীতলা ষষ্ঠী থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার সুতির বংশবাটি গ্রামে শুরু হল রাজ রাজেশ্বরী দুর্গোৎসব। এই পুজোকে ঘিরে মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার মানুষ মেতে উঠেছেন আনন্দে। বসেছে মেলা, যাত্রা, বাউল, নাটক ও কবিগানের আসর। এক কথায় রাজ রাজেশ্বরী দুর্গোৎসবকে ঘিরে দুই জেলায় হিন্দু, মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ আনন্দে মুখরিত।
[বাগদেবীর আরাধনার রাতেই রাঢ়বঙ্গ মাতে ‘শিল ষষ্ঠী’ উৎসবে]
পিছিয়ে পড়া জেলা মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লকের বংশবাটি গ্রাম। গ্রামটি বীরভূম জেলা লাগোয়া। সরস্বতী পুজোর পরের দিন থেকে এক অন্য পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন গ্রামের বাসিন্দারা। রাজ রাজেশ্বরী মায়ের পুজো। পুজো শেষ হয় পূর্ণিমা তিথিতে। নবমী তিথিতে গ্রামে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। পুজোর উদ্যোক্তা অভিরাম মজুমদার জানালেন, রাজ রাজেশ্বরী দুর্গার ষোড়শী রূপ। দেবী শবাসনে বিরাজমান। পুজো চলে মাঘী পূর্ণিমা পর্যন্ত। বসে মেলাও। কথিত আছে, বহু বছর আগে রোজগারের আশায় অন্য গ্রামে যাচ্ছিলেন স্থানীয় রাতুরি গ্রামের এক শাঁখারি। পথে এক তরুণী তাঁর কাছে শাঁখা পরতে চান। শাঁখা পরানোর পর টাকা চাইতেই ওই তরুণী বলেন, ভট্টাচার্য বাড়ির মেয়ে তিনি। ভবানন্দ ভট্টাচার্য তাঁর বাবা। তাঁর কাছে যেন টাকা নিয়ে নেন শাঁখারি। এদিকে শাঁখারির কথা শুনে তো হতবাক ভট্টাচার্য দম্পতি। ওই দম্পতি যে নিঃসন্তান! তড়িঘড়ি রাজুয়া দীঘির পারে ছুটলেন ভট্টাচার্য দম্পতি। দেখলেন, শাঁখা পরিহিত এক কন্যা রাজুয়া দিঘির মধ্যে চলে যাচ্ছে। সেই শুরু। বংশবাটি গ্রামের ভট্টাচার্য বাড়ির রাজ রাজেশ্বরীর পুজো আজ সর্বজনীন।
[মণ্ডপ জুড়ে অজস্র সাইকেলে শৃঙ্খলার বার্তা, পড়ুয়াদের হাতে অন্যরকম শিল্পকর্ম]
বংশবাটি গ্রামে রাজ রাজেশ্বরীর মন্দিরটি সংস্কার করেছেন গ্রামবাসীরা। নয়া মন্দিরের উচ্চতা ১১৫ ফুট। গ্রামবাসীদের দাবি, এটি রাজ্যের সবচেয়ে উঁচু মন্দির। সরস্বতী পুজোর পরের দিন থেকে মাঘী পূর্ণিমা পর্যন্ত মহাধূমধামের সঙ্গে চলে পুজোপাঠ। বসে মেলা ও বাউল গানের আসর। ভেদাভেদ ভুলে আনন্দে মেতে ওঠেন হিন্দু, মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ।
[জলপাইগুড়ির হনুমান মন্দিরে পূজিত হন নেতাজিও]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.