সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আকাশ কালো। ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে বৃষ্টি। সমুদ্রের গর্জন। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূল এলাকায় ধীরে ধীরে খারাপ হচ্ছে আবহাওয়া। শুধু সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা নয়, গাঙ্গেয় এলাকাতেও বইছে ঝোড়ো হাওয়া। ফুঁসছে সুন্দরবনের সমস্ত নদীগুলি। বেশ কিছু নদীবাঁধে ফাটলও দেখা দিয়েছে। যাকে ঘিরে বাড়ছে আশঙ্কা। যদিও তৈরি রয়েছে প্রশাসনও। প্রচার করে সতর্ক করা হচ্ছে বাসিন্দাদের।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের (Remal) ল্যান্ডফলের সময় যত এগোচ্ছে রাজ্যজুড়ে খারাপ হচ্ছে আবহাওয়া। সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে (Purba Medinipur) বৃষ্টির সঙ্গে চলছে ঝোড়ো হাওয়া। দিঘার (Digha) সমুদ্রে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। পর্যটকদের স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের কর্মীদের সৈকতে কড়া নজরদারি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে নামা বারণ। তাঁদের পরিবার নিয়ে সতর্কতা মেনে সমুদ্রতট ছেড়ে সুরক্ষিত জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে। শুধু সমুদ্র নয় ফুঁসছে সুন্দরবনের নদীগুলোও। কাঁচা নদীর বাঁধ বসে গিয়েছে বলে খবর। মাতলা, হোগলা, বিদ্যাধরী, রায়মঙ্গল সমস্ত নদী বাঁধের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। পাশাপাশি কুলতলিতে জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে। সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকেই। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। কাঁচা বাড়িতে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ইতিমধ্যে কলকাতা (Kolkata) -সহ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরের আকাশ মেঘলা। দফায় দফায় বৃষ্টি চলছে। বইছে দমকা হাওয়া। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা তিন জেলাতেই ভারী বৃষ্টি হবে। রবিবার প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রতি ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত দমকা ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে। অন্যান্য জেলায় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার।
পরিস্থিতির মোকাবিলায় কোমর বেঁধে তৈরি প্রশাসনও। উত্তর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে অতিরিক্ত ৫টি করে শয্যা তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে কলকাতা পুলিশও। নম্বর দুটি হল ৯৪৩৬১০৪২৮ এবং ৯৪৩২৬ ১০৪২৯। এছাড়াও দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশেষ তহবিল গঠন করেছে রাজ্য সরকার। দুর্যোগ সামলাতে সব জেলাকেই এই তহবিল থেকে অর্থ দেওয়া হয়েছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ বঙ্গের প্রতিটি জেলার প্রশাসনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে নবান্ন (Nabanna) থেকে। সেচ, বিদ্যুৎ, কৃষি, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের সঙ্গে প্রতিনিয়ত সমন্বয় রেখে চলেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব জেলাতেই ত্রাণ সামগ্রী তৈরি রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.