সুব্রত বিশ্বাস: লকডাউন চলাকালীন ভবঘুরেদের বিভিন্ন স্টেশনে খাবার দিয়েছে রেল। কিন্তু দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে পরিষেবা দেওয়ার পর রবিবার থেকে খাবার দেওয়া বন্ধ করল রেল। এর ফলে বিভিন্ন স্টেশন চত্বরে থাকা লক্ষ লক্ষ দুস্থ মানুষ বিপাকে পড়বে বলেই আশঙ্কা।
আইআরসিটিসির গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র জানান, শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৭টি ট্রেনে খাবার দিতে হচ্ছে। লকডাউন চলাকালীন যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা বন্ধ থাকায় গত দু’মাস হাওড়া বেস কিচেন ফাঁকা থাকায় সেখানে খাবার তৈরি করে দরিদ্র মানুষদের দেওয়া হত। হাওড়া, শেওরাফুলি, বর্ধমান, আসানসোল-সহ বেশ কিছু স্টেশন চত্বরে এই খাবার বিলি করতেন আরপিএফ কর্মীরা। পাঁচ থেকে দশ হাজার মানুষকে খাবার দেওয়া হত। এখন শ্রমিক ট্রেনে প্রায় বাইশ হাজার প্যাকেট খাবার দিতে হচ্ছে। যা যোগান দিতে গিয়ে গরিব মানুষদের খাবার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। চতুর্থ দফার লকডাউন উঠে যাওয়ায় সেই খাবার বণ্টন বন্ধ করা হয়েছে রবিবার থেকে।
উল্লেখ্য, লকডাউননের জেরে অনাহারেই দিন কাটছিল স্টেশন চত্বরে শুয়ে থাকা মানুষগুলোর। দুবেলা ভিক্ষে করেই দিন গুজরান করা যাদের রোজনামচা লকডাউনে তাঁরাই পড়েছিলেন বিপত্তিতে। সমস্যায় পড়েছিলেন স্টেশন চত্বরে থাকা হকার, কুলিরাও। নিত্যযাত্রী না থাকায় ভাটা পড়ে তাঁদের জীবনের ছন্দেও। এহেন সময়ে করোনা মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লকডাউন চলাকালীন দেশবাসীকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল ভারতীয় রেল। প্রতিদিন প্রায় এক লক্ষ মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার দায়িত্বও নিয়েছিল তারা। গত ২৮ মার্চ থেকে আইআরসিটিসি-র (IRCTC) তরফে এই গরিব মানুষগুলোর মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিদিন দুপুরে বিপুল পরিমাণে খাবার রান্না করা হয়। তারপর তা কাগজের প্লেটে করে জনসাধারণের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়। রাতে আইআরসিটিসি-র তরফ থেকে ফুড প্যাকেট বানিয়েও বিলি করা হয় স্টেশন চত্বরে থাকা ভবঘুরে-সহ গরিবদের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় রেলের খাবারের দায়িত্ব আইআরসিটিসি-ই পালন করে আসছে। তাই করোনা মোকাবিলায় রেল সাহায্যে হাত বাড়ালে আইআরসিটিসি-র কর্মীরা দিন-রাত এক করে দিয়েছিলেন সকলের অন্ন জোগান দিতে। এবার সেই পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়বেন হাজার হাজার দুস্থ মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.