Advertisement
Advertisement
মৃত ১৮ দিনের শিশু

জোর করে ভুল বয়ানে সই করিয়েছে, রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ মৃত শিশুর বাবার

চিকিৎসার অভাবে ট্রেনেই মৃত্যু হয় ১৮ দিনের শিশুর।

Railways forced to sign wrong statement, alleges Deceased childs Father
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:June 11, 2020 3:44 pm
  • Updated:June 11, 2020 4:11 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কেরল থেকে শ্রমিক ট্রেনে বাংলায় ফেরার পথে ট্রেনেই চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয়েছিল পুরুলিয়ায় পরিযায়ী শ্রমিকের ১৮ দিনের শিশুর। সেই ঘটনায় ফের একবার রেলের অমানবিকতার রূপ প্রকাশ্যে এসেছে। এবার রেলের বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ আনলেন শিশুর বাবা দিলদার আনসারি। জোর করিয়ে একটি কাগজে কোনও অভিযোগ নেই বলে লিখিয়ে নেয় রেল। এমনই অভিযোগ পুরুলিয়ার জয়পুরের বাসিন্দা দিলদারের। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের তরফে জেলা পরিষদের সভাধিপতি ওই পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন। সেই সঙ্গে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেয় পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল।

পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের বালি গ্রামের বাসিন্দা দিলদার আনসারি গত ৬ বছর ধরে কেরলের কাসারগড়ে একটি ব্যাগের কারখানায় কাজ করতেন। পরিবার নিয়ে থাকতেন ওখানে। বছর খানেক আগে দিলদারের ভাই সরফরাজও সেখানে গিয়ে ব্যাগের কারখানার কাজে যোগ দেন। ১৮ দিন আগে দিলদারের স্ত্রী রেশমা কাসারগড় সরকারি হাসপাতালে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। গোটা দেশের বন্দি দশায় আনসারি পরিবারে নতুন সদস্যের আবির্ভাব ভুলিয়ে দিয়েছিল অনেক কিছুই। লকডাউন শিথিল হওয়ার পর মেয়েকে নিয়ে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে ফিরছিলেন দিলদার, রেশমা, সরফরাজরা। সোমবার রাত ১০টা নাগাদ ট্রেনে উঠেছিলেন তাঁরা। সব ঠিকই ছিল। মঙ্গলবার রাতে মেয়েকে দুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়ার পর তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন রেশমাও।

Advertisement

[আরও পড়ুন: অমানবিক রেল, চিকিৎসার অভাবে কেরল থেকে বাংলায় ফেরার পথে মৃত ১৮ দিনের শিশু]

একটু গভীর রাত, ঘড়িতে দেড়টা বাজে তখন, রেশমা মেয়ের গায়ে হাত দিয়ে টের পান যে ১৮ দিনের শিশু ঠিক স্বাভাবিক নেই। তিনি দিলদার এবং সরফরাজকে ডেকে তোলেন। সরফরাজ তখনই রেলের হেল্পলাইন নং ১৩৯-এ ফোন করে সমস্যার কথা জানান, চিকিৎসার আবেদন করেন। তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে রেলের কিছু করার নেই। সব দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। অসহযোগিতা শুরু এখানেই। এরপর মাঝে বেশ কয়েকটা স্টেশন পেরিয়ে ওড়িশার বহরমপুর স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে কোলে নিয়ে স্টেশনে নেমে রেল পুলিশের কাছে বারংবার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন রেশমা, সরফরাজরা। কেউ কর্ণপাত করেনি। নিয়ম অনুযায়ী, শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন কোনও স্টেশনে দাঁড়ালেও শ্রমিকদের গন্তব্য ছাড়া নামার অনুমতি দেওয়া হয় না। এই নিয়ম দেখিয়ে ১৮ দিনের নিস্তেজ হয়ে আসা শিশুর চিকিৎসার আবেদনে সাড়া না দিয়ে ট্রেনে তুলে দেওয়া হয়। রাত আড়াইটে থেকে তিনটের মধ্যে ১৮ দিনের শিশু ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ট্রেন তখন ওড়িশার বালাসোরের কাছে।

বুধবার রাতে শিশুর বাবা দিলদার আনসারিকে রেলের আধিকারিকরা একটি কাগজে জোর করে লিখিয়ে নেন যে তাদের কোনও অভিযোগ নেই। তাঁদের কোনও সমস্যা হয়নি l এই পরিবার হিন্দিতে কথা বলতে পারলেও এই ভাষায় অক্ষর জ্ঞান নেই। পরে ওই বয়ানের কথা তাঁরা বুঝতে পারেন l পুরুলিয়ার জয়পুরের গ্রামের বাড়িতে এসে রেল ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন দিলদার ও তাঁর পরিবার। যারা জোর করে ওই বয়ান লিখিয়ে নেয় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করার কথা বলেন মৃত শিশুর বাবা।

[আরও পড়ুন: যেমন দক্ষতা তেমন কাজ, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘স্কিল ম্যাপিং’ রাজ্যের]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement