সম্যক খান, মেদিনীপুর: এক উচ্চপদস্থ রেলকর্তা যাচ্ছিলেন এক্সপ্রেস ট্রেনে। তাঁর ট্রেনকে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিতে দীর্ঘক্ষন আটকে রাখা হয় অন্য একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে। এরই জেরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। তাঁরা স্টেশন ম্যানেজারের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি রেল লাইনে নেমেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। কোনও কোনও মহিলা যাত্রী আবার নিজের কাছে থাকা লাল ওড়নাকেও লাইনের উপর ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। শেষমেশ এক্সপ্রেস ট্রেনটিকেই ছোট্ট ওই স্টেশনে দাঁড় করাতে বাধ্য হন স্টেশন কর্তৃপক্ষ। মাইকে ঘোষণাও করা হয় প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কোনও যাত্রী প্রয়োজন মনে করলে তারা এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে যাত্রা করতে পারেন। এভাবেই কোনওরকমে পরিস্থিতি সামাল দেন রেল কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহষ্পতিবার সকালে আদ্রা ডিভিশনের গোদাপিয়াশাল স্টেশনে।
এদিন সকালে খড়্গপুর থেকে হাতিয়াগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেন প্রায় ঘন্টাখানেক লেটে চলায় উত্তপ্ত ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ট্রেনের এক নিত্যযাত্রী শঙ্কর মহাপাত্র বলেছেন, খড়্গপুর স্টেশন থেকে ট্রেনটি সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও তা নির্দিষ্ট সময়ে ছাড়েনি। প্রায় আধ ঘন্টা দেরীতে ট্রেন ছাড়ে। তার উপর মেদিনীপুর স্টেশনে অনেকক্ষণ ওই ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। যখন ট্রেনটি গোদাপিয়াশাল স্টেশনে পৌঁছায়, তখন ট্রেনটি প্রায় এক ঘন্টারও বেশি দেরি চলছে। ওই ট্রেনটিতে প্রচুর নিত্যযাত্রী যাতায়াত করেন। ট্রেন লেট থাকায় যাত্রীদের ক্ষোভই ছিল। এদিকে গোদাপিয়াশাল স্টেশনে মাইকে ঘোষণা করা হয় আগে আরণ্যক এক্সপ্রেস ছাড়বে। তারপর ছাড়া হবে হাতিয়া প্যাসেঞ্জারকে। আর তাতেই পরিস্থিতি রীতিমতো অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে। স্টেশন ম্যানেজারের ঘরের সামনে শুরু হয় বিক্ষোভ। অনেক আবার লাইনে নেমেও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
জানা গিয়েছে, শালিমার থেকে ভুজুডিগামী আরণ্যক এক্সপ্রেসটি সওয়া দশটা নাগাদ মেদিনীপুর স্টেশনে এসে পৌঁছায়। পরবর্তী স্টেশন শালবনী। রেল দপ্তর সূত্রে খবর, আরণ্যক এক্সপ্রেসে চেপে কলকাতা থেকে আদ্রা যাচ্ছিলেন কয়েকজন রেলকর্তা। তাই ওই ট্রেনটি নির্দিষ্ট স্টেশনে একেবারেই ঘড়ি ধরে নির্দিষ্ট সময়ে পাস করানো হচ্ছিল। কিন্তু যাত্রী বিক্ষোভের কারণে আরণ্যক এক্সপ্রসকে মেদিনীপুর ও শালবনী স্টেশনের মাঝে গোদাপিয়াশালে থামাতে বাধ্য হয় রেল কর্তৃপক্ষ। হাতিয়া প্যাসেঞ্জার থেকে নিত্যযাত্রীরা আরণ্যক এক্সপ্রেসে উঠলে ফের ট্রেনটিকে ছাড়া হয়।
ছবি: নিতাই রক্ষিত
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.