শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: বড় আশা নিয়ে পদ্মাপাড়ে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন রায়গঞ্জের এক ছাত্র। কিন্তু উত্তাল পরিস্থিতির মাঝে কোনওক্রমে প্রাণ হাতে নিয়ে উত্তর দিনাজপুরের বাড়িতে ফিরলেন যুবক। তবে চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। শোনালেন, ওপারে কী নির্মম অত্যাচার চলছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর সেই কাহিনি। বললেন, “ভেবেছিলাম হস্টেলে ঢুকেই মেরে দেবে।”
দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের বগুড়ার টিটিএসএস মেডিক্যাল কলেজ। গতবছর সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন অনুভব ঘোষ নামে রায়গঞ্জের ওই ছাত্র। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা। কিন্তু গত আগস্টেই রাতারাতি বদলে গিয়েছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মহম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের শাসনভার হাতে নিতেই মৌলবাদী দাপট চরমে উঠেছে। প্রাণ বাঁচাতে ওপারের হিন্দুরা দলে দলে সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে এপারে আসার চেষ্টা করছেন। এই অশান্তির মাঝে কোনওক্রমে পালিয়ে রায়গঞ্জের বাড়িতে ফিরলেন ছাত্র।
তাঁর কথায়, “জাস্ট ভাবতে পারছি না বাড়িতেআছি। কয়েকদিন ক্যাম্পাসে যে পরিমাণ মিছিল দেখেছি। মনে হচ্ছিল, হস্টেলে ঢুকেই মেরে ফেলবে। সেই থেকে বাড়ি ফেরার প্ল্যান করছিলাম। ডাক্তারি পড়া আর হবে কী না জানি না, তবে আর ওদেশে যাব না।” ছাত্রের বাবা অপূর্বকুমার ঘোষ রায়গঞ্জের বিন্দোল হাই স্কুলের বাংলা ভাষা সাহিত্যের-সহ শিক্ষক পদে কর্মরত। মা সরকারি হাসপাতালের সিনিয়র নার্স। গোটা ঘটনায় আতঙ্কে তাঁরা। তবে অদ্ভুতভাবে একেবারে উলটো ছবি বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের আরেক ডাক্তারি পড়ুয়ার। সিরাজগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীর বাবা করণদিঘি হাই মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক শাহিদুর রহমান বলেন, “ওখানে এখন ক্লাস চলছে মেয়ের। মাস খানেক আগে হিলি সীমান্ত হয়ে সিরাজগঞ্জের মেডিক্যাল কলেজে মেয়ের হস্টেলে গিয়েছিলাম। তার পর তো হস্টেলেই আছে। সামনে পরীক্ষা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.