ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: অস্ত্রের পাহাড়ে বিমল গুরুং। আচমকা পুলিশি অভিযানে মোর্চা সভাপতির ডেরায় খোঁজ মিলল অস্ত্র ভাণ্ডারের। পাতলেবাসের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র উদ্ধার হল। তিন আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে তিনটি দল পাহাড়ের তিন জায়গায় তল্লাশি চালায়। পাতলেবাস, সিংমারি ও মালিঝোরায় অভিযানে আরও অস্ত্র মিলতে পারে বলে পুলিশ মনে করছে। মোর্চার গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী করুণা গুরুংকেও পুলিশ জালে তুলেছে। প্রশাসন কঠোর হওয়ায় আরও দিশাহীন মোর্চা। নতুন করে টানা বনধ ডেকে আপাতত মুখরক্ষায় বিমল গুরুংয়ের দল। তল্লাশিতে তির-ধনুক উদ্ধার নিয়ে মোর্চা নেতৃত্বর দাবি প্রশিক্ষণের জন্য রাখা হয়েছিল। তাদের ফাঁসাতেই এই কাজ করেছে প্রশাসন।
[অ্যাম্বুল্যান্স নেই, সাইকেল চালিয়ে সাত মাসের ভাগ্নীর মৃতদেহ বইলেন যুবক]
মোর্চার তাণ্ডব রোখার ওষুধ কী, তা দার্জিলিংয়ে গিয়ে জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই রাতারাতি বদলি করা হয়েছিল দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপারকে। পাহাড়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তিন আইপিএস অফিসারকে। এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের পদক্ষেপ বুঝিয়ে দিল রাজ্য কী চাইছে। বুধবার একপ্রস্থ রেইকির পর বৃহস্পতিবার ঘিরে ফেলা হয় পাতলেবাসে বিমল গুরুংয়ের ডেরা। সকাল থেকে চক্রব্যূহ তৈরি করে পালানোর সমস্ত পথ আটকে দেওয়া হয়। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদীর নেতৃ্ত্বে আধ ঘণ্টার অভিযানে গুরুংয়ের বাড়ি থেকে বিপুল অস্ত্রের খোঁজ মেলে। ওই বাড়ির একটি আলমারি থেকে প্রচুর তির-ধনুক, খুকরি ও বিস্ফোরক আটক করা হয়। এমনকী প্রচুর নগদও বাজেয়াপ্ত হয়। গুরুংয়ের বাড়িতে আরও অস্ত্রের খোঁজে তল্লাশি চালায় পুলিশ ও আধা সেনা। পাতলেবাসের ওই বাড়ি থেকে দল পরিচালনা করেন বিমল গুরুং। ঘটনার পর থেকে মোর্চা সভাপতির হদিশ নেই। সিংমারিতে মোর্চার পার্টি অফিসেও তল্লাশি চালানো হয়। পাতলেবাসে গুরুংয়ের বাড়ির পাশের একটি স্কুল ও হস্টেলেও ছানবিন চলে। মোর্চার মালিঝোরার অফিসও ছিল পুলিশের নজরে। দার্জিলিংয়ের তিনটি জায়গায় তিনটি দল অভিযান চালায়। সিদ্ধিনাথ গুপ্তা, অজয় নন্দা এবং জাভেদ শামিম কালিম্পং, কার্শিয়াংয়ে চষে বেড়ান। পুলিশকে আক্রমণের জন্য এই অস্ত্র মজুত করা হয় বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন কার্শিয়াংয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় নারীমোর্চার নেত্রী করুণা গুরুংকে।
পুলিশি অভিযানে শুরুতে দিশেহারা হলেও, পরে পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় নামে মোর্চা। বিমল গুরুং ঘনিষ্ঠ বিনয় তামাংয়ের দাবি, তিরন্দাজি প্রতিযোগিতার জন্য ওই তির-ধনুক রাখা হয়েছিল। তাকেই অস্ত্র হিসাবে দেখাতে চাইছে পুলিশ। পুলিশি জুলুমের অভিযোগ অনির্দিষ্টকালের বনধ চালিয়ে যাওয়ার ডাক দিয়েছে মোর্চা। কয়েকটি জায়গায় অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে মোর্চার বিরুদ্ধে। পেডং পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন লাগানো হয়। পাতলেবাসে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মুখর হয়েছে তৃণমূল। দার্জিলিংয়ের জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম দেবের বক্তব্য, এধরনের অস্ত্র মজুত বেআইনি। রাজ্য সরকার সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.