সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: জয়পুর কাণ্ডে দুই বিজেপি সমর্থকের মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাইল বিজেপি। রবিবার পুরুলিয়ার জয়পুরের ঘাঘরা ও ছটকা গ্রামে দুই মৃত বিজেপি সমর্থকের বাড়িতে গিয়ে এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেন দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা৷ একইসঙ্গে এই ঘটনার প্রতিবাদে পুরুলিয়া-সহ শহর কলকাতায় আন্দোলন হবে বলেও জানান রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি৷
আগামী ৬ সেপ্টেম্বর এই দুই গণহত্যার প্রতিবাদে বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতা-কর্মীরা সদরদপ্তর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মহামিছিল করবে বলেও জানান রাহুল সিনহা৷ এদিন ঘাঘরা ও ছটকা গ্রামে গিয়ে দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, “আমরা এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাই। ঘাঘরা গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের দিন কি এমন ঘটনা ঘটল যে, পুলিশকে ঝাঁকে-ঝাঁকে গুলি চালাতে হবে? আমাদের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের কে খুন করার জন্যই এই গুলি চালানো হয়। কোন অফিসার গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল তার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারকে মামলা করতে হবে। না হলে আমরা ওই অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা করব। এই ঘটনায় আমরা যেমন রাজনৈতিকভাবে লড়াইয়ে নেমেছি তেমনই আইনি লড়াই লড়ব। এই ঘটনার প্রতিবাদে পুরুলিয়ায় যেমন আন্দোলন হবে তেমনই কলকাতাতেও আমরা পথে নেমে মহামিছিল করব।”
[টার্গেট উনিশের লোকসভা, রামনবমীর পর এবার জন্মাষ্টমী পালন গেরুয়া শিবিরের]
এদিন রাহুল সিনহার সঙ্গে বিজেপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রদেশ পঞ্চায়েত প্রমুখ মুকুল রায়, জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী ও দলের ল’সেল। তাঁরা এদিন সমস্ত ঘটনা শুনে খাতায় লিপিবদ্ধ করছিলেন। গত ২৭ আগস্ট এই গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে ঘিরে পুলিশের গুলিতে দুই বিজেপি সমর্থকের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু পুরুলিয়া জেলা পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনা খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু ঘটনার পর এক সপ্তাহ পার হলেও পুলিশ এই বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি৷ উল্টে এই ঘটনার জেরে জয়পুর থানার অধীনে থাকা বাগলতা তদন্ত কেন্দ্রের অফিসার-ইন-চার্জকে ক্লোজ করে৷
এদিন বিজেপির প্রতিনিধি দল পুরুলিয়া থেকে জয়পুরে এসে আরবিবি হাইস্কুলে একটি শোক সভা করে। তারপর তারা মৃত দুই বিজেপি সমর্থক দামোদর মণ্ডলের গ্রাম ছটকা ও নিরঞ্জন গোপ ওরফে ছুটুর গ্রাম ঘাঘরা গ্রামে যান। ছটকা ও ঘাঘরা গ্রামে গিয়ে ওই মৃত সমর্থকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ওই প্রতিনিধি দল। এদিন রাহুল সিনহা মৃত দামোদর মণ্ডলের ছেলে পঙ্কজ মণ্ডল ও সুভাষ মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। একইভাবে নিরঞ্জনের স্ত্রী বৈশাখী গোপের সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা জানান। বিজেপির তরফে দুই পরিবারকে অর্থ সাহায্য করেন বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। এদিন ছটকা গ্রাম থেকে বার হওয়ার সময় এলাকার মহিলারা ওই বিজেপির প্রতিনিধি দলকে ঘিরে জানতে চান এরপর তারা এখানে কিভাবে থাকবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে রাহুল সিনহা বলেন, “আপনারা দুর্গা রূপী মা। অসুর একদিন বধ হবেই। দল আপনাদের পাশে আছে।” এদিন মুকুল রায় শোকসভায় পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দেগে পুলিশ সুপারের কড়া সমালোচনা করেন। একইসঙ্গে ঘাঘরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির যে জয়ী সদস্যর শংসাপত্র বাতিল করা হয় এদিন সেই বিষয়েও সরব হন তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.