ধীমান রায়, কাটোয়া: স্রেফ ভুয়ো তথ্য দিয়ে দলিল তৈরি করাই নয়, সেই জাল দলিল ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের নথিভুক্তও করিয়ে ফেলেছিল প্রতারক। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকদের তৎপরতায় ধরা পড়ে গেল প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডা। তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিনব এই প্রতারণা চক্রের হদিশ মিলেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়।
কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের মুলটিকৃষ্ণপুর গ্রামে প্রায় ২৮ কাঠা জমি আছে বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের। খাতায়-কলমে সেই জমির মালিক ছিলেন বনবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বনবিহারীবাবু পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকতেন কলকাতায়। ২০০১ সালে মারা যান তিনি। বনবিহারীবাবুর মেয়ে পাপিয়াও চিকিৎসক। তিনি থাকেন দিল্লিতে। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কেউই আর মুলটিকৃষ্ণপুরে গ্রামে থাকেন না। ফলে পারিবারিক জমি দেখভাল করারও কেউ নেই। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছিল ইউনুস শেখ নামে ওই গ্রামের এক ব্যক্তি।
ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর সূত্রে খবর, কাটোয়ার মুলটিকৃষ্ণপুর গ্রামে বন্দ্যোপাধ্যায়দের প্রায় বিঘা খানেক জমি নিজের নামে নথিভূক্ত করিয়ে নেয় ইউনুস। অনলাইনে আবেদন করার সময়ে অভিযুক্ত জানায়, ২০১৮ সালে বনবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় দলিল করে ওই জমি তাকে বিক্রি করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, নথিভুক্ত করার পর জমিটি আবার অন্য একজনকে বিক্রিও করে দেয় ইউনুস। যিনি জমিটি কিনেছিলেন, তিনি যথারীতি নিজের নামে জমির মিউটেশনও করিয়ে নেন। কিন্তু জমির আসল মালিক বনবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় তো ১৭ বছর আগে মারা গিয়েছেন! গত ২৯ জুলাই কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের জমি জালিয়াতির লিখিত অভিযোগ করেন বনবিহারীবাবুর মেয়ে পাপিয়া। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামেন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকরা। তদন্তে পাপিয়াদেবীর অভিযোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকরা। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ইউনুস শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এফআইআরে আরও বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.