অর্ণব দাস, বারাকপুর: প্রাণের ভয়কে তুচ্ছ করে মানবাধিকারের লড়াইয়ে অবিচল চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। দেশে ফিরে ২ জানুয়ারি ফের ইসকনের সন্তের মুক্তির জন্য় সওয়াল করবেন তিনি। মঙ্গলবার সাফ জানিয়ে দিলেন আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ।
তাঁর কথায়, “আমার মৃত্যু হলে বাংলাদেশেই হবে, যদি কোনও আইনজীবীর হাতেও মৃত্যু হতে হয় তবুও মানবাধিকার রক্ষার্থে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে লড়ব।” দেশে ফিরলে ফের হামলা সহ নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা থাকলেও মঙ্গলবার বারাকপুরে দৃঢ় কন্ঠে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশে জেলবন্দি ইসকনের চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। তিনি বললেন, “রবিবার রাতে চিকিৎসার জন্য পশ্চিমবঙ্গে এসেছি। কিন্তু বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম বলছে আমি ষড়যন্ত্র করছে এদেশে এসেছি। এটা ঠিক নয়। আমি শুধুমাত্র আইনজীবী নই, একজন মানবাধিকার কর্মী। কোন রাজনৈতিক দল করি না।”
এদিন বারাকপুর আদালতের আইনজীবীরা দেখা করে সংবর্ধিত করেন তাঁকে। পরে রবীন্দ্র ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে যান বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রমের প্রধান কার্তিক মহারাজ। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ তুলে ফের কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “দুই শান্তির দূত কার্তিক মহারাজ ও মহারাজ অর্জূন সিং যারা প্রেম বিলিয়ে বেড়ান, তারা আজ রবীন্দ্রবাবুর কাছে গেছেন দেখলাম। আসলে তাঁরা বাংলাদেশকে এখানে ভোটের মার্কেটিংয়ে ব্যবহার করতে চাইছেন। কেন্দ্রীয় সরকার আগে হস্তক্ষেপ করুক। বিদেশ সচিব গিয়েও কাজ হয়নি। হিন্দুদের আবেগ ভোট মার্কেটিংয়ে ব্যবহার করছেন। বাংলাদেশ দেখিয়ে উসকানি দিচ্ছেন আসলে।” এদিন একই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের মুখে। তাঁর কথায়, “আওয়ামী লীগের আমলেও বাংলাদেশের সমস্যা হয়েছে কিন্তু এতটা কোনদিনও হয়নি। আমি মনে করি বাংলাদেশের মানবাধিকার সুরক্ষিত করতে ভারত সরকারের এগিয়ে আসা উচিত।”
আগামী ২ জানুয়ারি চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর পরবর্তী শুনানিতে তিনি অবশ্যই উপস্থিত থাকবেন জানিয়ে ফের বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি চূড়ান্ত খারাপ। চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর মত মানুষকে লিগ্যাল অ্যাসিস্ট করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী। আমাকে বলছে কোর্টে আসলে বিপদ হবে। কেন আমাকে পুলিশি সুরক্ষা নিতে হবে, আমি তো আইনজীবী। মানে নিশ্চয়ই আমার বিপদ আছে। গতবার পুলিশ সহযোগিতা করেছে বলেই আমি বেঁচে গেছি।” এদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করে কার্তিক মহারাজ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিদিন হিন্দুদের উপর যেভাবে অত্যাচার হচ্ছে, তারমধ্যেও উনি লড়াই করছেন বলে প্রাণের সংশয় অবশ্যই আছে।” এনিয়ে অর্জুন সিং বলেন, “রাজ্য সরকারকে বলবো যতদিন রবীন্দ্র ঘোষ বারাকপুরে আছেন, ওনাকে নিরাপত্তা দেওয়া হোক। যদি রাজ্য সরকার নিরাপত্তা না দেয় তাহলে আমরা নিশ্চিত ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলবো, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.