নন্দন দত্ত, সিউড়ি: জলাতঙ্কে উজার হতে পারে গ্রাম। এই আতঙ্কে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে প্রতিষেধক নেওয়ার লম্বা লাইন। জলাতঙ্কের টিকা নিতে দলে দলে বাসিন্দারা আসছেন। ইতিমধ্যেই ২০০জন বাসিন্দা প্রতিষেধক নিয়েও ফেলেছেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের খয়রাশোলের কড়িধ্যা গ্রামে।
জানা গিয়েছে, কড়িধ্যা গ্রামের একটি কুকুর সম্প্রতি পাগল হয়ে মারা যায়। মৃত্যুর আগে গ্রামেরই এক বাছুরকে কামড়ায়। কুকুরের কামড়ে কিছুদিন পর বাছুরটির মৃত্যু হয়। তবে কামড় খাওয়ার পরও বেশ কিছুদিন বাছুরটি বেঁচে ছিল। সেই সময় মায়ের দুধও খেয়েছে সে। কড়িধ্যা গ্রামে বড় করে লক্ষ্মীপুজো হয়। স্থানীয় গোয়ালার থেকে গরুর দুধ নিয়েই তৈরি হয় পুজোর প্রসাদ। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু সেই গরুর বাছুরের মৃত্যু হতেই গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কুকুরের কামড়ে বাছুরের মৃত্যুর খবর ছড়াতেই আতঙ্কিত বাসিন্দারা জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অসুস্থ বাছুরটি যেহেতু মা গরুর দুধ খেয়েছিল, আর ওই গরুর দুধ থেকেই পুজোর প্রসাদ তৈরি হয়েছে। তাই সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকলেও থাকতে পারে, এই ভেবেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে প্রতিষেধক নিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ গড়াই, সুবোধ গড়াই, মনসা সাহা। তাঁরা জানান, বাছুরটির মৃত্যু হতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাড়িতে বাচ্চারা রয়েছে সবাই পুজোর প্রসাদ খেয়েছে। তাদের যদি কিছু হয়ে যায়। এই ভেবেই সবাই স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র গিয়ে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নিয়েছেন। তাঁদের দেখাদেখি গোটা গ্রামের বাসিন্দারাই ইতিমধ্যে প্রতিষেধক নিয়ে ফেলেছেন।
এদিকে কড়িধ্যার জলাতঙ্কের আতঙ্কের খবর পৌঁছেছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরে। সব শুনে পশু বিশেষজ্ঞ সৌরভ কুমার ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ির বক্তব্য, এনিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। সৌরভ কুমার জানান, বাছুরটির যদি জলাতঙ্ক হত তাহলে সে তার মায়ের বাঁটে মুখ দিয়ে দুধ খেতে পারত না। তাছাড়া প্রত্যেকবার দুধ দোয়ানোর আগে গোয়ালারা বাঁট জল দিয়ে ধুয়ে নেন। তাছাড়া সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জলাতঙ্কে আক্রান্ত গরুর দুধও যদি মানুষের দেহে যায় তাতে বিপদের সম্ভাবনা কম। অন্যদিকে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘সাধারণত এভাবে জলাতঙ্কের ভাইরাস ছড়ায় না। তাই আতঙ্কের কিছু নেই। যদিও আমরা খয়রাশোল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রতিষেধক পাঠিয়েছি।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.