রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ছিলেন রুহুল। নামের সামান্য হেরফেরে হয়ে গেলেন রাহুল। হাসনাবাদ থেকে কাঁথিতে এসে তিন বছর লোক ঠকানোর কারবার রমরমিয়ে চলছিল। পরিচয় স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ। প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম ভুল লিখে হাতুড়ে ডাক্তারের সন্দেহ মুখে পড়লেন স্বঘোষিত ওই চিকিৎসক। হাতুড়ের হাতে ধরা পড়ে গেলেন ভুয়ো ডাক্তার। তারপর পুলিশ, আদালত। কাঁথির ভগবানপুরের এঘটনায় চিকিৎসকদের একাংশের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গলায় ঝোলানো স্টেথো। সাইনবোর্ডে নাম ডক্টর আর কে মণ্ডল। যোগ্যতা এমবিবিএস ডিজিও এমডি, গাইনোকোলজিস্ট। শুধু পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ডাক্তার মণ্ডলের তিন-চার খানা চেম্বার। এইসব শুনে ভগবানপুরে ভীমেশ্বরী বাজারে আর কে মণ্ডলের কাছে প্রচুর রোগী আসতেন। মণ্ডল ডাক্তারের নাম-ডাক শুনে সম্প্রতি তাঁর কাছে রোগী পাঠিয়েছিলেন স্থানীয় হাতুড়ে চিকিৎসক সঞ্জয় পণ্ডা। কিন্তু প্রেসক্রিপশন এবং ওষুধের নাম দেখে সঞ্জয়ের সন্দেহ হয়। ধোঁয়াশা কাটাতে ওই হাতুড়ে ডাক্তার শনিবার সন্ধ্যায় আর কে মণ্ডলের চেম্বারে যান। এমবিবিএস ডিজিও থাকলে এমডি নয়, এমএস লেখার কথা। তা না থাকায় সঞ্জয় ওই ভুয়ো চিকিৎসককে প্রশ্ন করেন। এতে অস্বস্তি পড়ে যান আর কে মণ্ডল। ওই ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ইন্টারনেটে খুঁজেও সঞ্জয় কোনও তথ্য পাননি। এর পর আর কে মণ্ডলকে চেপে ধরলে দোষের কথা কবুল করেন। ক্ষুব্ধ এলাকার লোকজন ওই জাল ডাক্তারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। ভগবানপুর থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার রবিবার কাঁথি মহকুমা আদালতে পাঠায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ঠগবাজ চিকিৎসক নাম ভাঁড়িয়ে কারবার চালাচ্ছিলেন। তার আসল নাম রাহুল কুদ্দুস, বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদে। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে রাহুল কুমার মণ্ডল ওরফে আর কে মণ্ডল হিসাবেই পরিচিত হন। জেরায় অভিযুক্ত রাহুল কুদ্দুস জানিয়েছেন তিন বছর ধরে তিনি এই কারবার চালাচ্ছিলেন। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি। ভুয়ো চিকিৎসক ধরতে সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন। এই প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরে ধরা পড়ল জাল ডাক্তার। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকারিক জানিয়েছেন জেলার বেশ কিছু চিকিৎসক তাদের নজর রয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.