রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: তার অপরাধ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে সে গ্রামবাসীদের ছাগল খেয়েছিল। আর সেই অপরাধেই একটি ১৫ ফুট লম্বা অজগরকে প্রাণে মারার উপক্রম গ্রামবাসীদের৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য অজগরটিকে মারতে পারেননি কেউই। তার আগেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিমাতি রেঞ্জের বনকর্মীরা৷ মুখের কাছে দড়ি বাঁধা অবস্থায় অজগরটিকে উদ্ধার করা হয়৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর সাপটিকে আবারও জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
নিমতি দোহমনি এলাকায় বেশ কয়েকদিন ধরেই ছাগল হাপিস হয়ে যাচ্ছিল। এলাকায় ছাগল চোর ঢুকেছে বলে সন্দেহ তৈরি হয়। কিন্তু শনিবার নিমতি মাঠের কাছে একটি ঝোপ থেকে অজগরকে বেড়িয়ে আসতে দেখেন গ্রামবাসীরা৷ ওই মাঠেই একটি ছাগলও খায় সাপটি৷ অজগরটিকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। ততক্ষণে ছাগলটি অবশ্য মারা গিয়েছে। মৃত ছাগলটিকে সাপের মুখ থেকে টেনে বের করা হয়। রীতিমতো সাপটিকে ধরে মাঠের একটি গাছের সঙ্গে প্রায় ১ ঘণ্টা টানা হ্যাঁচড়া চলতে থাকে। এর পর ঠিক হয় অজগরটিকে ঝুলিয়ে মারা হবে।
কিন্তু তার আগেই খবর পেয়ে যায় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিমাতি রেঞ্জের বনকর্মীরা৷ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্মীরা এসে সাপটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয় সাপটিকে৷
বন্যপ্রাণ আইন অনুযায়ী, কোনও পশু, পাখি বা সাপের উপর হামলা চালালে তা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ৷ কিন্তু ওই ঘটনার পর বেশ কয়েকঘণ্টা কেটে গেলেও গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা এবং উপক্ষেত্র অধিকর্তাকে ফোন করা হলেও, তাদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ ওই ছাগলটির মালিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা৷ চাপে পড়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিমতি রেঞ্জের অফিসার ভবেন ঋষি বলেন,“সাপটিকে দড়ি দিয়ে বাঁধা ঠিক হয়নি। এর আগেও গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়েছিল। অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ছাগলের মালিককেও আর্থিক সাহায্য করা হবে বলেই জানিয়েছেন বনকর্মীরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.