ছবি: অমিতলাল সিং
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বয়সে অনেক ছোট। তবু দায়িত্ব পাহাড়প্রমাণ। কখনও চাষাবাদের কাজ। আবার কখনও বাবার মুদি দোকান সামলে পড়াশোনা করে মাধ্যমিকে (Madhyamik Exam) ৬৭০ নম্বর পেল পুরুলিয়ার মানবাজারের সুমন রায়। বাবাকে সাহায্যের পরেও অভাবনীয় নম্বর পেয়ে সকলকে তাক লাগল সে। সুমনের সাফল্যে গর্বিত তার অভিভাবকেরা।
নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসার।পুরুলিয়ার (Purulia) মানবাজার ১ নম্বর ব্লকের চাঁদড়া-পায়রাচালী গ্রাম পঞ্চায়েতের মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমন। বাড়ি থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে চাঁদড়া হাইস্কুলে পড়ে সে। তার বাবা ঘরের ভিতরেই ছোট্ট একটি মুদি দোকান চালান। মুদি দোকান থেকে মাসে ৩-৪ হাজার টাকা আয়। সামান্য জমি রয়েছে সুমনের বাবা। সেই জমিতে চাষাবাদ হয়। দু’দিক সামলাতে গিয়ে নাজেহাল দশা সুমনের বাবার।
অর্থ সংস্থানে বাবার পাশে দাঁড়ায় সুমন। ফলে পেট চালাতে বাবাকে চাষাবাদ ও মুদি দোকানের কাজে সাহায্য করে সে। কাজের ফাঁকে পড়াশোনা করে সুমন। আর্থিক বাধা পেরিয়ে প্রত্যেকটি বিষয়ে ডবল এ গ্রেড (AA Grade) পেয়ে পাশ সুমন। বাংলায় ৯৪, ইংরাজিতে ৯৮, অঙ্ক ও ভৌতবিজ্ঞানে ৯৯, জীবনবিজ্ঞানে ৯৬, ইতিহাসে ৯৩ ও ভূগোলে ৯১ নম্বর পেয়েছে সে। তার সাফল্যে খুশি স্কুলছাত্রের পরিবার। চাঁদড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গোপাল দে জানান, “সুমন আমাদের স্কুলের গর্ব। আর্থিক বাধা সত্ত্বেও ও যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা সত্যিই অভাবনীয়।”
সুমন বলে, “ইচ্ছে আছে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে লেখাপড়া করে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। বাঁকুড়াতে ভরতি হলে খুব ভাল হত। কিন্তু অর্থের কথা ভাবলেই পিছিয়ে যেতে হচ্ছে।” তবে স্থানীয়রা জানান, “সুমনের পাশে আছি। কারণ ওই তো মানবাজারের গৌরব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.