Advertisement
Advertisement

Breaking News

Purulia

‘ভূতে’র মাথার দাম দশ গুণ বেড়ে ৫০ লাখ! পুরুলিয়ার ‘অশরীরী’র আতঙ্ক কাটাতে রাত জাগবে বিজ্ঞান মঞ্চ

'পুরুলিয়া বিজ্ঞান মঞ্চে'র প্রতিনিধিরা কুসংস্কার দূর করতে স্থানীয় গ্রামবাসীদের বোঝান।

%%title%% %%page%% %%sep%% %%sitename%%Purulia's local people panic over ghost rumors
Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 18, 2025 4:30 pm
  • Updated:April 18, 2025 4:30 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: এই মাল্লিগণ্ডার বাজারে ভূতের দাম বেশ চড়া! না হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভূতের মাথার দাম পাঁচ লাখ থেকে বেড়ে ৫০ লাখে দাঁড়িয়ে যায়। পুরুলিয়ার হুড়া ব্লকের অর্জুনজোড়া গ্রামে ভূতের আতঙ্ক ছড়াতেই গত বুধবার গ্রামে গিয়ে ‘পুরুলিয়া বিজ্ঞান মঞ্চে’র প্রতিনিধিরা কুসংস্কার দূর করতে স্থানীয় গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে ভূত দেখাতে পারলে পাঁচ লক্ষ টাকা ইনামের ঘোষণা করেছিলেন। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবারই ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পুরুলিয়া জেলা কমিটি এক ভিডিওবার্তায় ঘোষণা করেছে, ওই এলাকায় ভূত দর্শন করাতে পারলে ৫০ লাখ টাকা ইনাম দেওয়া হবে।

এদিকে, বিজ্ঞান মঞ্চ গ্রাম ঘুরে আসার পরেও ভূতের আতঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না হুড়া ব্লকের অর্জুনজোড়া-সহ আশপাশের গ্রামের মানুষ। এখনও অর্জুনজোড়া মোড় থেকে কেশরগড় যাওয়ার পিচ রাস্তায় মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। তার মধ্যেই এক লাফে ওই ভূতের মাথার দাম ৫ থেকে বেড়ে হল ৫০ লাখ! পুরুলিয়ার ওই বিজ্ঞানমনস্ক সংগঠনের দাবি, কুসংস্কার, বুজরুকি ঠেকাতেই ওই ঘোষণা করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা কমিটি জানিয়েছে, আগামী রবিবার অর্জুনজোড়া গ্রামের ওই রাস্তায় তাঁরা রাত জাগবেন। যেমনভাবে পুরুলিয়ার ঝালদা দুই ব্লকের বেগুনকোদর স্টেশনে ভূত রহস্য ফাঁস করতে কয়েক বছর আগে রাত জেগে ছিল বিজ্ঞানমঞ্চ।

Advertisement

একইভাবে সেই কায়দাতেই রাত জেগে অর্জুনজোড়া-সহ ওই এলাকার মানুষের কাছে তাঁরা প্রমাণ করতে চান ভূত বলে আদতে কিছু নেই। এছাড়া আগামী শনি বা রবিবার ওই গ্রামে সচেতনতার প্রচারে বেরোবে ‘ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভূতুড়ে স্টেশন বলে এক সময় পরিচিত হয়ে ওঠা বেগুনকোদরে যেভাবে আমরা রাত জেগে প্রমাণ করেছিলাম ভূত নেই অর্জুনজোড়া গ্রামের ওই রাস্তায় রাত জেগে প্রমাণ করব ভূতের কোনও অস্তিত্ব নেই। এসবই গুজব।”

এখনও অর্জুনজোড়া মোড় থেকে কেশরগড় যাওয়ার ওই ‘ভূতের রাস্তা’ পাহারা দিচ্ছে হুড়া থানার সিভিক ভলান্টিয়াররা। পুরুলিয়া বিজ্ঞান মঞ্চ সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্জুনজোড়া গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জলধর গড়াই প্রথম এই অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী ছিলেন। তার মধ্যে আতঙ্ক এমন পর্যায়ে চেপে বসেছিল যে, সে ঝালদার গুরুবাবার কাছে গিয়ে ঝাড়ফুঁক করান বলে অভিযোগ। ওই গুরুবাবারও খোঁজ খবর শুরু করেছে ‘পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ’। এই বিজ্ঞানমনস্ক সংগঠন চাইছে, এই ওঝা গুরুবাবা-রা যাতে এসব ঘটনার প্রশ্রয় না দেয়।
বাম আমলে জঙ্গলমহলের এই জেলায় ভূত-প্রেত, ডাইনির ঘটনা মারাত্মক আকার নিয়েছিল। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সচেতনতার প্রচারে তা অনেকাংশই কমে গিয়েছে।

তবে এখনও বনমহলের এই জেলাকে কুসংস্কার থেকে বাঁচানো যাচ্ছে না। অর্জুনজোড়া ছাড়াও ওই এলাকার জজডি, কুদলং, বাঘাটাড় রামডির মতো গ্রাম ভূতের আতঙ্কে কার্যত থরহরি কম্পমান। ওই গ্রামগুলির মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, গত দু’সপ্তাহের বেশি সময়ে ওই অলৌকিক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন প্রায় ৪-৫ জন। ওই পথ দিয়ে বাইক নিয়ে গেলেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বাইকের স্টার্ট। তারপর সহজে বাইক স্টার্ট করা যাচ্ছে না। সেই সময় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরছে কোনও অশরীরী। যাকে চোখে দেখা যাচ্ছে না। সারা গায়ে শুধু আঁচড় দিয়ে যাচ্ছে। বহু কষ্টে বাইকের স্টার্টের পর সেখান থেকে ফিরে আসা যাচ্ছে। এই বিষয়ে ওই সকল গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিজ্ঞান মঞ্চ কথা বলার পর জানিয়েছে, এটা গুজব ছাড়া আর কিছু নয়। ফলে বিজ্ঞান মঞ্চ হুড়া থানার পুলিশকে জানিয়েছে, এরকম গুজব রটালে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement