Advertisement
Advertisement
দেবেন মাহাত হাসপাতাল

দেবেন মাহাত হাসপাতাল থেকে বেপাত্তা ২ স্বাস্থ্যকর্তা, করোনা ভীতির মাঝে বিতর্কে আধিকারিকরা

স্থায়ী সমিতির বৈঠকেও আসেননি তাঁরা।

Purulia's Deben Mahato Hospital's two officials have no trace

ফাইল ফটো

Published by: Sayani Sen
  • Posted:March 23, 2020 6:11 pm
  • Updated:March 23, 2020 6:11 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পুরুলিয়ায় কোয়ারান্টাইনের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে করোনা ভীতিতে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ছেড়ে বেপাত্তা দুই স্বাস্থ্য কর্তা। দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী গত শনিবার থেকেই অনুপস্থিত। সেই সঙ্গে এই হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপালও রবিবার সকাল থেকে বেপাত্তা। পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার করোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এম  ভি রাও গত শনিবার হুড়ায় যে বৈঠক করেন সেখানে গরহাজির ছিলেন অধ্যক্ষ। গত শুক্রবার পুরুলিয়া জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির বৈঠকেও তিনি আসেননি। অথচ গত ২০ মার্চই রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের প্রধান সচিবের নির্দেশে সমস্ত ছুটিই বাতিল করা হয়েছে।

পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ সুত্রে জানা গিয়েছে, কাউকে কিছু না জানিয়েই এই দুই স্বাস্থ্য কর্তা এই হাসপাতাল থেকে বেপাত্তা হয়ে যান। যার জেরে ক্ষুব্ধ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো ও পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রী বলেন, “যখন স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা রয়েছে সেখানে এই অবস্থায় হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাওয়া একেবারেই অনুচিত। তাঁদের দু’জনকেই সোমবারের মধ্যে দেবেন মাহাতো মেডিক্যালে আসতে বলা হয়েছে। তাঁরা কাউকে কিছু না জানিয়ে কীভাবে হাসপাতাল ছাড়লেন এই বিষয়ে তাঁদের জবাব দিতে হবে। আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবো।” এদিকে সভাধিপতি সোমবার এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছে অভিযোগ করবেন বলে জানান। এদিন রাতে সভাধিপতি বলেন, “অধ্যক্ষ কোন উইকএন্ডেই পুরুলিয়ায় থাকতে চান না। অধ্যক্ষকে দেখে এমএসভিপিও সেই একই রাস্তায় হেঁটেছেন। আমি স্বাস্থ্য দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সরাসরি অভিযোগ করব। এই কঠিন পরিস্থিতিতে তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে বেপাত্তা হলেন কি করে? মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শুক্রবার জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্যের বৈঠকেও আসেননি।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: লকডাউনের আগে ‘সুবর্ণ সুযোগ’, জনতার আতঙ্ককে হাতিয়ার করে দেদার কালোবাজারি]

এদিকে রবিবার রাত পর্যন্ত এই জেলায় কোয়ারান্টাইনের সংখ্যাটা ১২০০ ছাড়িয়ে যাওয়ায় উদ্বেগে জেলা প্রশাসন-সহ স্বাস্থ্যদপ্তর। পুরুলিয়া জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার রাত পর্যন্ত আইসোলেশন, হোম কোয়ারান্টাইন ও কোয়ারান্টাইন মিলিয়ে সংখাটা যেখানে ছিল কুড়ি। রবিবার সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে আইসোলেশনে ৩, কোয়ারান্টাইন ১ ও হোম কোয়ারান্টাইনে ১২৩২ জন। এদিকে হাসপাতালের আরও একশো শয্যার কোয়ারান্টাইনও বাড়ানো হয়েছে। জয়চন্ডী পাহাড়ের যে যুব আবাস রয়েছে সেখানে ৫০ শয্যা ও রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে আরও ৫০ শয্যার কোয়ারান্টাইন করা হয়েছে। ফলে সবে মিলিয়ে এই জেলায় হাসপাতালে মোট ৪০০ কোয়ারান্টাইনের ব্যবস্থা করা হল। এদিকে স্বাস্থ্যদপ্তরের কুইক রেন্সপন্স টিম ছাড়াও প্রতিটি ব্লকে তিনটি করে করোনা রেসপন্স টিম তৈরি করেছে প্রশাসন। এই টিমে প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মীরা রয়েছেন। যারা বিদেশ বা ভিন রাজ্য থেকে আসছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে কোয়ারান্টাইনের ব্যবস্থা করার জন্যই মূলত এই টিম তৈরি করা হয়েছে। কারণ এই জেলায় বিদেশ বা ভিন রাজ্য থেকে এলাকায় যাঁরা আসছেন তাঁদের নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ চলছে। সেই পরিস্থিতি দূর করতেই এই ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement