ফাইল ছবি।
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কথায় আছে মাঘের শীতে বাঘও কাঁপে! কিন্তু পুরুলিয়াতে পৌষেই কাঁপছে চিড়িয়াখানার প্রাণীরা। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক লাফে প্রায় পাঁচ ডিগ্রি নেমে যাওয়ায় পুরুলিয়ার চিড়িয়াখানায় ডায়েট চার্টই পালটে ফেলা হয়েছে বন্যপ্রাণীদের। শরীর গরম রাখতে একেবারে উষ্ণ দুধ খাওয়ানো হচ্ছে ভল্লুকদের। সেইসঙ্গে তাদেরকে জঙ্গলে থাকা মৌচাক ভেঙে মধুও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
সুরুলিয়ার চিড়িয়াখানার প্রাণীদের জন্য আনা হয়েছে লেপ-কম্বলও! সম্বর, চিতল হরিণ, লালমুখো বানর, হনুমান, পাইথন, পেঁচা, সজারুর এনক্লোজারে রাতের বেলায় লাগানো হচ্ছে খড়, চটের বস্তা। কারণ, মাঝ ডিসেম্বরেই পুরুলিয়ার শীত যে ঝাড়খন্ডের রাঁচিকেও টেক্কা দিয়ে দিয়েছে! বুধবার রাঁচির সর্বনিম্ন ছিল ৬.৬ ডিগ্রি। তাই পুরুলিয়ার চিড়িয়াখানায় এমন এলাহি আয়োজন। এদিন বাঁকুড়াতেও প্রায় তিন ডিগ্রি নেমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৫-এ ঠেকেছে। বুধবার পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার সর্বনিম্ন ছিল যথাক্রমে ১১ ও ১২.৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। চলতি শীতের মরশুমে এদিনই ছিল এই দুই জেলার শীতলতম দিন। ফি বছরই পুরুলিয়ায় খুব দ্রুত শীত পড়ে। এবছর ডিসেম্বরের গোড়া থেকে নামতে থাকে তাপমাত্রার পারদ। এরপর পুরুলিয়া-বাঁকুড়া থেকে শীত কার্যত উধাও হয়ে যায়। পুরুলিয়াতেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির উপর উঠে যায়। গত রবিবার থেকে ফের দাপট দেখাতে শুরু করে শীত।
সেই কারণেই জেলার মিনি জুতে প্রাণী চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে বন্যপ্রাণদের তড়িঘড়ি ডায়েট চেঞ্জ করল এই চিড়িয়াখানার দায়িত্বে থাকা কংসাবতী উত্তর বনবিভাগ। এই চিড়িয়াখানার অধীনে ভল্লুক পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকা বিকাশ ও ব্রানিকে প্রতিদিনই দুধ ও ডিম দেওয়া হয়। কিন্তু শীতের দাপটে সেই দুধের পরিমান বাড়ানো শুধু নয়, রীতিমত গরম করে খাওয়ানো হচ্ছে। তাদের লাঞ্চ-ডিনারে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেদ্ধ ডিমের সংখ্যাও। তরমুজ বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে খেজুর। হরিণের খাদ্যতালিকাতেও রদবদল করে শসা, লাউ-এর পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে বিনস, বিট। পেঁচার লাঞ্চেও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুরগীর মাংসের পরিমান।
ছবি: অমিত সিং দেও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.