ছবিটি প্রতীকী
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: প্রায় ১৪ বছর ধরে মিড-ডে মিল বন্ধ শহর পুরুলিয়ার একটি স্কুলেই। রাজ্যজুড়ে মিড-ডে মিল নিয়ে হইচই হতেই শহর পুরুলিয়ার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ধবঘাটা হরিজন কলোনির রেনি রোড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিড–ডে মিল নিয়ে এমন কাণ্ড সামনে আসে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, স্কুলের পরিকাঠামো না থাকাতেই মিড–ডে মিল বন্ধ রয়েছে। আগে এই স্কুলের পাশে মন্দিরের পিছনে রান্না হত। কিন্তু ওই মিড–ডে মিল রান্না তে মন্দির এলাকা নোংরা হয়ে যাচ্ছে এই অভিযোগ তোলেন এলাকার বাসিন্দারা। ফলে স্কুলের জায়গা না থাকায় মিড–ডে মিল বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৫ সাল থেকে বন্ধ হওয়া এই মিড–ডে মিল ২০০৯ সাল নাগাদ স্কুল কর্তৃপক্ষ চালু করার চেষ্টা করলেও পিছু হঠতে হয়। সেইসময় স্কুল কর্তৃপক্ষ চেয়েছিল বাঁশ দিয়ে প্যান্ডেল করে ছাত্রদের জন্য দুপুরের আহারের ব্যবস্থা করার। যাতে পড়ুয়ারা অভুক্ত না থাকে। কিন্তু হোঁচট খেতে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়ে দেন, মিড–ডে মিল রান্নার ঘর, ডাইনিং শেড হবে তারপর রান্নার ব্যবস্থা। কিন্তু রান্নাঘর হবে কী করে? স্কুলে তো জায়গায় নেই। ফলে মিড–ডে মিলের হাঁড়ি চড়ার কাজ বন্ধই থেকে যায়।
তবে কিছুদিন আগে পুরুলিয়া পুরসভার কাছ থেকে খানিকটা জায়গা পেয়েছে এই স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থসারথি চৌধুরি বলেন, “২০০৬ সালে আমি এই স্কুলে কাজে যোগ দিই। তখন থেকেই এই স্কুলে মিড–ডে মিল বন্ধ ছিল। আমি চালুও করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পারিনি। আসলে সেইসময় এই স্কুলের জায়গা ছিল না। আর স্কুলের বাইরে অন্যত্র এই রান্না করার বিষয়ে এলাকায় অনুমতি মিলছিল না। তবে এবার জায়গা মিলেছে। আর পডুয়াদের অভু্ক্ত থাকতে হবে না।” মিড–ডে মিল রান্না না হওয়ায় এই স্কুলে স্কুলছুটও হচ্ছে পড়ুয়ারা। বর্তমানে এই স্কুলে ছাত্র–ছাত্রীর সংখ্যা ৪১ জন। শিক্ষক রয়েছেন দু’জন। পুরুলিয়া পুরসভার কাছ থেকে এই স্কুল কর্তৃপক্ষ খানিকটা জায়গা পাওয়ায় স্কুলের সীমানা প্রাচীর তৈরি করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ফলে মিড–ডে মিল রান্না করারও প্রক্রিয়া চালাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যজুড়ে মিড–ডে মিল নিয়ে শোরগোল হতেই এই বিষয়টি গত বুধবার কানে আসে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের। তারপরই জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বৃহস্পতিবার ওই স্কুলে পা রাখেন পুরুলিয়া সদর দু’নম্বর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক জয়দীপ রাউত। তিনি বলেন, “স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণেই মিড–ডে মিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্কুলের সীমানা প্রাচীর-সহ রান্নাঘর হয়ে গেলে দ্রুত এই ব্যবস্থা চালু হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.