সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ছোট থেকে নাচ-গান করতে ভালবাসত মেয়েটি। দেখেশুনে তাই বিয়েও করেও এমন এক ছেলেকে। ঘরে নাচ-গানের চর্চাটুকু তো থাকবে। কিন্তু নেই ভালবাসাই যে মেয়ের প্রাণ নেবে তা কল্পনাও করতে পারেনি বছর ২৬-এর সোমা মণ্ডলের পরিবার। অভিযোগ, সোমার স্বামী সঞ্জয় মাহাতো রসিক ছিলেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে নাচনি শিল্পে নিয়ে আসেন। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা জেনেও সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানের জন্য আড়াই হাজার টাকা অগ্রিম নেন তিনি। অভিযোগ, স্ত্রীকে জরিবুটি খাইয়ে গর্ভপাতও করান। এরপর দুর্বল স্ত্রীকে জোর করে গত রবিবার ঝাড়খণ্ডের একটি অনুষ্ঠানে নিয়ে যান। নাচের মঞ্চেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় সোমার। যদিও জরিবুটি খাইয়ে স্ত্রীর গর্ভপাত করানোর অভিযোগ মানতে চাননি সঞ্জয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সোমা মণ্ডল। বর্ধমানের আউশগ্রামে তাঁর বাপের বাড়ি ছিল। বছর আটেক ধরে পুরুলিয়ার বরাবাজারে এক রসিকের সঙ্গে তিনি থাকতে শুরু করেন। পরে রসিক সঞ্জয় মাহাতো সোমাকে বিয়েও করেন। তাঁদের ছ’বছরের একটি সন্তানও আছে। মানভূম নাচনি উন্নয়ন সমিতি ও লোকসংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের তরফে সঞ্জয়ের কঠোর শাস্তির দাবি তোলা হয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক তথা নাচনি শিল্পী পোস্তুবালা দেবী জানান, “ঝাড়খণ্ডে অনুষ্ঠানের বায়না পাওয়ার পরই রসিক ওর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে জরিবুটি খাইয়ে গর্ভপাত করায় বলে জানতে পারি। শুনেছি ওকে জোর করে অনুষ্ঠানে নিয়ে গিয়েছিল। দুর্বল শরীরের কারণেই পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। আমরা থানায় যাব। এর তদন্ত চাই।”
মারাঠি চ্যানেলের উপর এবার চটল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা
ওই সংগঠনের তরফে অভিযোগ, বিয়ের পর সোমার স্বামী ও রসিক সঞ্জয় জোর করে তাঁকে নাচনি শিল্পে নিয়ে আসে। সোমার বাপের বাড়ির লোকজনকে তা জানানো পর্যন্ত হয়নি। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালে এসেছিলেন সোমার মা রেখা মণ্ডল। তিনি বলেন, “ছোট থেকে নাচ, গান করতে মেয়ে ভালবাসত। সেই ভালবাসার টানেই ঘর ছাড়ল। একদিন শুনলাম বিয়ে করেছে। মেয়েই গল্প করেছিল রাতে গাড়ি করে কোথায় তাঁদের নাচতে নিয়ে যাওয়া হত। কিন্তু নাচতে গিয়ে প্রাণ যাবে এ কথা তো ভাবতেই পারিনি।” ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
বিয়ের আগে পার্টনারের থেকে এ সব প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই জেনে নিন
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.