সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কোয়ারেন্টাইনে ঘরবন্দি থেকে ঘাম ঝরাচ্ছেন বলিউড-টলিউডের তারকরা, আরও মন দিয়েছেন শরীরচর্চায়। সেই দৃশ্য পোস্ট হচ্ছে সোশ্যাল সাইটে। ঠিক একইভাবে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে প্রশাসনের ‘নজরবন্দি’ থাকা মানুষজনের একাকিত্ব ঘোচাতে শরীরচর্চার পাঠ দিচ্ছে পুলিশ। প্রতিদিনকার শরীরচর্চার সেই ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট করে ১৪ দিন এভাবেই কাটানোর বার্তা দিল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
তবে শুধু শরীরচর্চা নয়। কোয়ারেন্টাইনে প্রশাসনের ‘নজরবন্দি’ থাকা মানুষজন যাতে কোনওভাবেই সমাজের আর পাঁচজনের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন না মনে করেন, তাই তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে প্লে কার্ডস। ফলে কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ডে দিব্যি তাস পিটিয়েও প্রশাসনের নজরে রয়েছেন। এই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ওয়াই–ফাই সংযোগও।
পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের লক্ষ্য, ১৪ দিন ধরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষজনের যাতে কোনও মানসিক সমস্যা না হয়। বলা যায়, ‘মেন্টাল ট্রমা’ কাটাতে বিভিন্ন কোয়ারেন্টাইন স্থলকে সেখানে থাকা মানুষজনের ‘দ্বিতীয় ঘর’ হিসাবে তুলে ধরছে জেলা প্রশাসন। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার
বলেন, “করোনামুক্ত পুরুলিয়া গড়া আমাদের লক্ষ্য। তাই কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষজনকে নজরবন্দি করা হলেও, তাঁরা যাতে একাকিত্বে না ভোগেন, তাঁদের যাতে কখনওই না মনে হয় যে সামাজিকভাবে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে, তাই আমাদের নানান প্রয়াস – এই যা।”
শনিবার জেলাশাসক ঝালদা মহকুমার একাধিক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র পরিদর্শন করে সেখানে থাকা মানুষজনদের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব রেখে কথা বলেন। তাঁদের অভয় দেন। বোঝান, সবসময় জেলা প্রশাসন তাঁদের পাশে আছে।
বড়দের পাশাপাশি এখানে থাকা শিশুদের মন ভাল রাখারও ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। তাদের হাতে দেওয়া হচ্ছে খেলনা। ছোটদের কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ডকে উপভোগ্য করে তুলতে পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনও অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের ভাবী নাগরিকদের মধ্যে থাকা প্রতিভাকে খুঁজে বের করতে তারা অণুগল্প লিখন, আঁকা কিংবা হাতের কাজের ভিডিও কমিশনের দপ্তরে পাঠানোর কথা বলেছে। ১৫ এপ্রিলের মধ্যে সেসব পাঠাতে হবে কমিশনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর কিংবা ই-মেলে। শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশিত হবে।
ছবি: সুনীতা সিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.