সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দীর্ঘ দু’দশক ধরে চলা বেআইনি পাথর খাদান বন্ধ করতে এবার অভিযান শুরু করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনl ভূমি ও ভূমি সংস্কার, বনদপ্তরের আধিকারিক ও পুলিশকে নিয়ে এই অভিযান শুরু হয়েছে পুরুলিয়ার বরাবাজারের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। তার জেরে কুড়ি বছরেরও বেশি সময় পর এসব এলাকার পাথর খাদান মাফিয়ামুক্ত হতে চলেছে। জেলা প্রশাসনের এই পদক্ষেপে স্বস্তি ফিরে পেলেন এলাকাবাসী।
পাথর নিয়ে বেআইনি কারবার বন্ধ করতে জঙ্গল রক্ষায় থাকা বনদপ্তরের টাস্ক ফোর্সও নজরদারি চালাবে। বরাবাজার ব্লকের এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১২০০ একর জমির উপর এই বেআইনি পাথর খাদান চলছিল। যার মধ্যে অধিকাংশ জমিই বনদপ্তরের। সরকারি খাস, বনদপ্তর ও রায়তি জমি মিলিয়ে বেআইনি খাদানের সংখ্যা ছিল প্রায় ২০০, ক্রাশার ৪৩ টি। যার মধ্যে দু’-তিনটি বাদে সবই বেআইনি। এই খাদানগুলিতে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর উত্তোলন করা হত। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড নিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
তাতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এখনও পর্যন্ত এই খাদান এলাকায় ১৫ টি রাস্তা কেটে ২৮ টি খাদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে বনদপ্তরের জমির ওপর রয়েছে ১৮ টি খাদান। রবিবার সকালে এই বিষয়ে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে এসে বনাধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে বনদপ্তরের জমির ওপর খাদান বন্ধে কড়া বার্তা দেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়। বনদপ্তরের জমির ওপর থাকা এই সমস্ত বেআইনি খাদান বন্ধ করে বৃক্ষরোপণ করা হবে বলে বনদপ্তর সূত্রে খবর। বনমন্ত্রী বলেন, “আমি আগেই বলেছি, বনদপ্তরের জমির ওপর কোনও বেআইনি পাথর খাদান বরদাস্ত করব না। অভিযান শুরু হয়ে গিয়েছে। দখল হওয়া জমি আমাদের হাতে আসছে। এই বিষয়ে আমি আজ বৈঠক করেছি। জঙ্গল রক্ষায় থাকা টাস্ক ফোর্সও কাজ করবে।”
পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ধারাবাহিকভাবে এই অভিযান চলবে। লকডাউনেও এই বেআইনি খাদান রমরমিয়ে চলায় ওই এলাকা থেকে অভিযোগ যায় পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দোপাধ্যায়ের কাছে। তারপরই তিনি ওই এলাকায় হানা দেন। কিন্তু সেই অভিযানের খবর আগেই ফাঁস হয়ে যায়। ফলে তিনি বেআইনি খাদানে গিয়ে দেখেন ‘লকডাউন’। এরপর সেখানে দাঁড়িয়েই খাদান বন্ধের নির্দেশ দেন সুজয়বাবু। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “বেআইনি পাথর খাদান বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ধারাবাহিক ভাবে এই অভিযান চলবে।”
ছবি: অমিত সিং দেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.