ছবি: জয়ন্ত দাস
ধীমান রায়, কাটোয়া: মেয়ের শরীর খারাপ। তাই নাতনিকে দেখতে আসার জন্য শাশুড়িকে অনুরোধ করে জামাই। ছোট্ট নাতনির শরীর খারাপ শুনে বছর ৪২-এর বিধবা মহিলা সরল বিশ্বাসে জামাইয়ের বাইকে চাপেন। কিন্তু মহিলা জানতেন না তাঁর জামাই ভিতরে ভিতরে কী ছক কষে রেখেছে। অভিযোগ, বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে রাতের অন্ধকারে নির্জন নদীচরে নিয়ে গিয়ে শাশুড়িকে গণধর্ষণ করে জামাই। সঙ্গে ছিল তার দুই বন্ধুও। নারকীয়, ঘৃণ্য, পাশবিক এই ঘটনা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমান (Purba Barddhaman) জেলার আউশগ্রামে।
ঘটনায় আউশগ্রাম থানায় জামাই-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তিনজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতরা হল সজল বাউড়ি(২৭), বাবু বাগদি (২৮) এবং গৌড় বাউড়ি(২৬)। তিনজনেরই বাড়ি আউশগ্রামের আদুরিয়া গ্রামে। ধৃতদের মধ্যে সজল বাউড়ি হল অভিযোগকারিনীর জামাই। মঙ্গলবার রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করার পর এদিন বুধবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হয়।
আউশগ্রাম থানার সীমান্তে বুদবুদ থানা এলাকার ভাতকুণ্ডা গ্রামের বাসিন্দা ওই বিধবা মহিলা। তাঁর তিন মেয়ে, এক ছেলে। সকলেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মহিলা জনমজুরের কাজ করেন। জানা গিয়েছে, ভাতকুণ্ডা গ্রামের পাশাপাশি পরিষা গ্রামে রক্ষাকালী পুজো উপলক্ষে মেলা বসেছে। এই অনুষ্ঠানে গত সোমবার এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন মহিলা। তিনি জানান সোমবার রাত প্রায় ১০টা নাগাদ আত্মীয় ও পরিচিতদের সঙ্গে মেলায় ঘুরছিলেন। তখনই মেলায় দেখা হয়ে যায় তাঁর ছোট জামাই সজলের সঙ্গে।
মহিলার কথায়, “আমার সঙ্গে জামাইয়ের দেখা হতেই প্রথমে জিজ্ঞাসা করে, ‘মা ভাল আছো? আমাকে ডেকে ঘুগনি খাওয়ায়। আমি বাড়ির খবর জিজ্ঞাসা করতে জামাই জানায় নাতনির শরীর খারাপ। একবার দেখে আসার অনুরোধ জানায়। আমি বিশ্বাস করে ওর বাইকে চাপি। তখন ওর একজন বন্ধু বাবু বাগদিও বাইকে চাপে।” নির্যাতিতার কথায়, দ্রুতগতিতে বাইক চালাচ্ছিল সজল। ভাতকুণ্ডা হয়ে কুনুর নদীর চরে নিয়ে আসা যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল সজলের আরও এক বন্ধু গৌড়। তিনজন মিলে টানতে টানতে নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় তাঁকে। মহিলা নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরই তিনজন মিলে তাঁকে ধর্ষণ করে।
অভিযুক্তরা সেখানেই মহিলাকে ফেলে বাইক নিয়ে চম্পট দেয়। কোনওরকমে আত্মীয়বাড়িতে ফিরে আসেন মহিলা। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে আত্মীয়দের কিছু জানাননি। নিজের বাড়ি ফিরে মঙ্গলবার আউশগ্রাম থানায় জামাই-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তিনজনকেই গ্রেপ্তার করেছে।
উল্লেখ্য, দিন ছয়েক আগে আউশগ্রামে দুই আদিবাসী নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর ফের গণধর্ষণের ঘটনা ঘটল আউশগ্রামে। এবার জামাইয়ের পাশবিক লালসার শিকার তার মাতৃসমা শ্বাশুড়ি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.