ছবি: প্রতীকী
ধীমান রায়, কাটোয়া: আত্মীয়ের কাছে পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরে তাঁর দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের চারা একপ্রকার জোর করেই রুইয়ে দিয়েছিল পাওনাদার। সেই ধান কাটতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বচসা। তার জেরেই ধান জমিতেই মা ও মেয়েকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলার মঙ্গলকোট থানার ইট্ট্যা গ্রামে। পুলিশ মাঠ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা দুজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতরা হলেন ভবানী গড়াই (৫০) ও তাঁর মেয়ে ফুলকুমারী গড়াই (২৮)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ভবানীদেবীর স্বামী এককড়ি গড়াই হাটে সবজি বিক্রি করতেন। তাদের তিন মেয়ের মধ্যে বড় ফুলকুমারী। মেজ মেয়ে স্বর্ণলতা কলকাতায় পড়াশোনা করেন। ছোট মেয়ে কিরণমালার কয়েকমাস আগে বিয়ে হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌড়চন্দ্র গড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেকদিন ধরেই তার তুতো ভাই এককড়ি অর্থাৎ নিহতের স্বামীর ঝামেলা চলছিল।
গৌড়চন্দ্রের স্ত্রী মুনমুনদেবীর কথায়, “আমার স্বামীর কাছে দফায় দফায় এককড়িরা টাকা ধার নিয়েছিল। মাসিক দেড় থেকে দুই শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার কথা। কিন্তু দীর্ঘ চারবছর ধরেই টাকা দিচ্ছিল না। সব মিলিয়ে প্রায় চার লক্ষ টাকা আমরা পাই।”
মুমমুনদেবী পুলিশের কাছে জানিয়েছেন, গৌড়চন্দ্র টাকা না পেয়ে এককড়ির কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার চার বিঘার মধ্যে দুই বিঘা জমি চাষ করতে দিতে। তাতে কিছুটা দেনা শোধ হত। কিন্তু এককড়ি রাজি না হলে গৌড়চন্দ্র একপ্রকার জোর করেই এককড়ির দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের চারা রুইয়ে দিয়েছিলেন। ঘটনার সূত্রপাত তখন থেকেই। মঙ্গলবার সকালে ওই দুই বিঘা জমির ধান কাটতে গিয়েছিলেন গৌড়চন্দ্ররা। তখন এককড়ি সবজি বিক্রি করতে ধারসোনা হাটে চলে গিয়েছেন। বাড়িতে ছিলেন স্ত্রী ভবানীদেবী ও মেয়ে ফুলকুমারী। তাদের জমিতে ধান কেটে নেওয়া হচ্ছে এই খবর পেয়ে ভবানীদেবী ও ফুলকুমারী মাঠে চলে যান। তারা ধান কাটতে বাধা দেন। অভিযোগ, সেসময় দুজনকে ভারী কিছু দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা হয়।
চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে গ্রামের লোকজন পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুজনকে মাঠ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবশ্য তার আগেই দুজনের মৃত্যু হয়। পলাতক গৌড়চন্দ্র। পুলিশ খুঁজছে তাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.