দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বৃহস্পতিবার ভেরে বঙ্গে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘুর্ণিঝড় ‘তিতলি’৷ আর তারই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গের উপর৷ ইতিমধ্যেই পঞ্চমী পর্যন্ত নিম্নচাপের জেরে পশ্চিমবঙ্গে ভারি ও মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর৷ ফলে, পুজোর আগে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবর হুগলির পুজো কমিটিগুলির কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। রীতিমতো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মণ্ডপ নির্মাণের কাজ শেষ করতে চাইছেন পুজো উদ্যোক্তারা৷ যাতে, পঞ্চমী থেকেই দর্শনার্থীরা মণ্ডপে মণ্ডপে নির্বিঘ্নে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন৷
ডানকুনির রামকৃষ্ণ স্পোর্টিং ক্লাবের কর্মকর্তা কৃষ্ণেন্দু মিত্র বলেন, ‘‘বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। তাই দুর্যোগের কারণে যাতে মানুষের প্রতিমা দর্শনে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাম্প রেডি রাখা হয়েছে। প্রচণ্ড বৃষ্টি হলে পাম্প চালু করে জল বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ এছাড়া মণ্ডপে প্ল্যাটফর্ম অনেকটাই উঁচু করা হচ্ছে যাতে জলে পা ভিজিয়ে প্রতিমা দর্শন করতে না হয়।’’
[কিশোরের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভয়াবহ ডাকাতি, লুট ৬ লক্ষ টাকার সামগ্রী]
কোন্ননগর দক্ষিণপাড়া সার্বজনীনের অসীম মিত্র বলেন, ‘‘রাস্তা থেকে প্যান্ডেল অনেকটা উঁচুতে তাই দর্শনার্থীদের ঠাকুর দেখতে খুব একটা অসুবিধা হবে না। এছাড়া এই এলাকাতে নিকাশি ব্যবস্থা এতটাই ভাল যে কোনও জল দাঁড়ায় না।’’ শ্রীরামপুরের গান্ধী ময়দানে ৫ ও ৬ এর পল্লীগোষ্ঠী ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তারা কিন্তু এই দুর্যোগ নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত। পুজো কমিটির সন্তোষ কুমার সিং বলেন, বৌদ্ধ মঠের আদলে তাঁদের মণ্ডপ গড়ে উঠছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে প্লাইউডের উপর সাদা প্রাইমার দিয়ে তার উপর সোনালি রং করার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ বৃষ্টি হলে রং ধুয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ ফলে, মাথার উপরে আচ্ছাদন করে রং করা হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য কর্মীসংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতের দিকে আবহাওয়া ভাল হলে রাতে রং করার কাজও হতে পারে। আশা করছেন, দেবী দুর্গা যা করবেন মঙ্গলের জন্যই করবেন।
[কষা মাংস দিয়ে ভোজ সেরে সিলিন্ডার নিয়ে উধাও চোর!]
শ্রীরামপুর পশ্চিম রেলপাড়ে আপনজন ক্লাবের উত্তম রায় জানান, প্রকৃতির উপর কারোর হাত নেই। আলাদা করে ব্যবস্থা নেওয়ার জায়গাও নেই। তবে আবহাওয়া দপ্তর পূর্বাভাসে জানিয়েছে, শুক্রবারের পর আবহাওয়া ভাল হয়ে যাবে-সেটাই আশার কথা। দর্শনার্থীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে তাঁদের যাতে বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে না হয় তার জন্যে মাথার উপর ছাউনির ব্যবস্থা করা হবে। অনেক ক্ষেত্রেই আবার পুজো কমিটির কর্তারা এরই মধ্যে রংয়ের কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য হিট দিয়ে রং শুকানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। তবে সব পুজো কমিটিগুলিই এখন ঈশ্বরের উপর ভরসা করে আছেন। এত সবের পরেও যা কিছু ভাল যা কিছু মন্দ তা নির্ভর করছে ঈশ্বরের উপর। তাদের আশা, ঈশ্বর তাঁদের নিরাশ করবেন না।
উত্তরপাড়া থেকে শ্রীরামপুর পর্যন্ত বহু কলেজ পড়ুয়ার বক্তব্য, বৃষ্টি হলেও তাঁরা নতুন পোশাক পরেই বেরোবেন। কারণ তাঁদের অনেকেই জানান, পুজোর এই কয়েকটা দিনই তো প্রিয় মানুষের পুজোর ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার আনন্দটা বিশেষভাবে অনুভব করা যায়। তাই ঝড় জল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে তারা পুজোর আনন্দে যদি ভিজতে হয় তাতে ক্ষতি কী!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.