সুব্রত বিশ্বাস: করোনার আতঙ্কে অনিশ্চিত পুজো। পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটলে কোনওমতেই ধুমধাম করে পুজো আয়োজন সম্ভব নয়। ব্যাপারটা ভালই বুঝে গিয়েছেন পুজো কমিটির মহিলা কর্মকর্তারা। এই দোলাচলের মাঝেই আবার হঠাৎ আবির্ভাব সুপার সাইক্লোন আমফানের। দুয়ের মেলবন্ধনে দিশেহারা বহু গৃহহীন মানুষ। তাই পুজোর চিন্তা ছেড়ে সেই সমস্ত বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তই নিলেন পুজোর কর্মকর্তারা। পুজোয় যে অর্থ খরচ হত, সেই টাকাতেই তাঁরা ত্রাণ পৌঁছে দিলেন দুর্গত এলাকায়।
গত বছর পুজোর পর থেকে কর্মকর্তারা ভেবেছিলেন, আসছে বছর ধুমধাম করে পুজোর আয়োজন হবে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি একেবারে উলটো। নোভেল করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) দাপট বদলে দিয়েছে তাঁদের চিন্তাভাবনা। কথা হচ্ছে বেলুড় শরৎ স্মৃতি সংঘের মহিলা পরিচালিত জগধাত্রী কমিটির। তাঁরাই পুজোর খরচের সমস্ত টাকা দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বিধস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দিলেন। উদ্যোক্তা মমতা ভট্টাচার্য্য, রুমা কুমার, ঈশিতা দাস, ছবি মাইতির কথায়, “আমফানে বিধস্ত সুন্দরবনের মানুষের কথা চিন্তা করে আমরা মত বদলে ফেলি। যত কম খরচে, সামান্যভাবে সম্ভব পুজো করব। মাসে মাসে সংগৃহীত পুজোর ফান্ড আর স্থানীয় মানুষের থেকে পাওয়া সাহায্য তুলে দিতে চেয়েছিলাম সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের হাতে।”
মহিলাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন ক্লাবের পুরুষ সদস্যরা। তাঁরাই দায়িত্ব নিয়ে জামাকাপড়, সাবান, চাল-ডাল, গুড়োদুধ, চিড়ে-মুড়ি, বিস্কুট-সহ প্রায় এক লক্ষ টাকার ত্রাণ পৌঁছে দেন। সেই সঙ্গে এলাকা স্যানিটাইজ করার সমস্ত সামগ্রীও নিয়ে যান। নৌকা করে পৌঁছন গোসাবা ব্লকের রায়বেরিয়া, মনমথপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায়। তিনদিন ধরে চলছে তাঁদের ত্রাণ ও স্যানিটাইজ করার কাজ। প্রায় তিন হাজার মানুষকে সাহায্য করেছেন তাঁরা। এর সঙ্গে চলে বিভিন্ন নৌকা, ফেরি ঘাট, ত্রাণশিবির ইত্যাদি জায়গায় জীবাণুনাশক স্প্রে করার কাজ।
কর্মকার্তারা জানান, ঝড়ে বিধস্ত মানুষের দুঃখ-কষ্ট হয়তো তাঁরা সম্পূর্ণ মুছে দিতে পারবেন না। কিন্তু সমব্যথী হয়ে সর্বহারাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াই ছিল মূল লক্ষ্য। অন্যান্য পুজো কমিটিকেও বিধস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানান তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.