ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ফের অশান্তির আঁচ শান্তিনিকেতনে (Shantiniketan)। কেন্দ্রবিন্দুতে সেই পৌষমেলার মাঠ। কলকাতা হাই কোর্ট গঠিত কমিটির নির্দেশে সোমবার থেকে সেখানে ফেন্সিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। তার বিরোধিতায় মঙ্গলবার থেকে আন্দোলনে নামল মেলামাঠ বাঁচাও কমিটি। সকাল থেকে বোলপুর এলাকায় মাইকিং করে চলছে প্রচার। প্রতিবাদ চলছে বাউল গানে। মেলার মাঠ ঘেরার বিরুদ্ধে তাঁদের প্রতিবাদে শামিল করার আহ্বান জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশ্বভারতীর (Vishva Bharati) আশ্রমিকদের। এ নিয়ে আগের দিনের মতো ফের গুরুতর অশান্তির আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
মাস খানেকেরও বেশি সময় ধরে সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছে শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার মাঠ। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মাঠটি ঘিরে ফেলতে চায়। পাঁচিল তোলার কাজ শুরু হতেই গত ১৭ আগস্ট তুমুল অশান্তির মুখে পড়তে হয় কর্তৃপক্ষকে। পে-লোডার দিয়ে তা ভেঙে দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূল নেতা নরেশ বাউড়ির বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে জল গড়িয়েছে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। রাজনৈতিক চাপানউতোরও কম হয়নি। সমস্যা সমাধানে কলকাতা হাই কোর্ট ৪ সদস্যের এক কমিটি তৈরি করে। শান্তিনিকেতনে সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাধানের গুরুদায়িত্ব পড়ে এই কমিটির উপর। কিন্তু আলোচনার টেবিলে মতৈক্য গড়ে তোলার কাজে ব্যর্থই হয় হাই কোর্ট গঠিত কমিটি। গত শনিবারও বৈঠকের পর তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন সেখানকার ব্যবসায়ী সমিতি, স্থানীয় বাসিন্দারা।
ওই দিনের বৈঠকে হাই কোর্ট গঠিত কমিটির সঙ্গে আলোচনার পর অনেকেই অভিযোগ তুলেছিলেন যে মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার পক্ষেই তাঁরা। এই মনোভাব পছন্দ হয়নি শান্তিনিকেতনের বাসিন্দাদের। সোমবার দেখা গেল, অভিযোগ অনেকাংশেই সত্যি। কারণ, হাই কোর্টের কমিটির তত্বাবধানেই মেলার মাঠে ফেন্সিংয়ের (Fencing) কাজ শুরু হয়েছে। এরপরই বিরোধিতা করে নিজেদের আন্দোলনের পরিকল্পনা করে মেলামাঠ বাঁচাও কমিটি।
সেইমতো আজ সকাল থেকে বোলপুর এলাকায় মাইকিং করে পাঁচিল বিরোধিতায় তাদের তরফে প্রচার করা হয়। বীরভূমের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে এ নিয়ে আবেদনপত্রও জমা দেওয়া হয়েছে বলে খবর। বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের এই বিরোধিতা আরও কতটা জোরদার হবে, সেটাই দেখার বিষয়। এ নিয়ে বেশ চিন্তায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ১৪৪ ধারা জারি হতে পারে এলাকায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.