সুনীপা চক্রবর্তী ও সুরজিৎ দেব: এতদিন শাসকদলের বিধায়ক, নেতা ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠছিল, এবার সেই একই হুলে বিদ্ধ হলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদা৷ সাংবিধানিক পদে বসে থাকা ঝাড়গ্রামের বিধায়কের বিরুদ্ধে উঠল কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ৷ যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে৷
[ আরও পড়ুন: অস্ত্র-সহ গ্রেপ্তার বিজেপি কর্মী, আদালতে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ বনগাঁয় ]
জানা গিয়েছে, কাটমানি ফেরত চেয়ে শনিবার দিনভর দফায় দফায় স্থানীয় গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বাড়িতে। ‘গ্রামবাসী’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে এদিন দহিজুড়ি অঞ্চলের বিভিন্ন পাড়ার মিছিল করেন বাসিন্দারা৷ এরপরই তাঁরা চড়াও হন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে৷ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন মহিলা থেকে শুরু করে বৃদ্ধারাও। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পে ঘর, শৌচালয়-সহ অন্যান্য পরিষেবা দেওয়ার নামে টাকা তুলেছেন জেলা তৃণমূল কোর কমিটির সদস্যরা৷ এমনকী ঝাড়গ্রামের বিধায়ক তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদার বিরুদ্ধেও এলাকা থেকে কাটমানি তোলার অভিযোগ উঠেছে৷ পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। লোধা পাড়ার শবর গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকেও টাকা নেওয়া হয়েছে৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে যান বিনপুর থানার আইসি এবং ডিএসপি রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস৷ বাসিন্দাদের অভিযোগ শোনেন তাঁরা৷ স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত পাল-সহ অন্যন্য গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, “বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা এবং স্থানীয় নেতা শেখ নাসিরউদ্দিন-সহ অন্যান্য নেতারা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের নামে টাকা তুলেছেন। আমারা চাই মানুষ তাদের টাকা ফেরত পাক।’’ এ বিষয়ে জানান জন্য বিধায়ক সুকুমার হাঁসদাকে ফোন করা হলেও, তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
[ আরও পড়ুন: অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে রূপবদল, মারধর করে পুলিশের জালে বৃহন্নলাবেশী সমকামী পুরুষ ]
একই ভাবে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার কাকদ্বীপের বুদাখালি এক বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে। টাকা ফেরত চেয়ে তার বাড়িতে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা৷ আন্দোলনে স্থানীয় বিজেপি কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্রের খবর।অভিযোগ, স্থানীয় মানুষের থেকে প্রচুর টাকা তুলেছেন কাকদ্বীপ বিধানসভার নামখানা ব্লকের বুদাখালি অঞ্চলের ২২৫/২২৬ নম্বর বুথের তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য দীপক সামন্ত এবং বুথ সভাপতি রাজু নস্কর৷ নানান সরকারি প্রকল্পের নামে টাকা তুলেছেন তাঁরা। যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা৷ তিনি জানান, ‘‘এটা গ্রামবাসীদের আন্দোলন নয়। বিজেপির মুখোশ পরে সিপিএমের লোকজন এভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের খেপিয়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের অপব্যবহার করছে এরা। পুলিশকে বলা হয়েছে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে। অভিযোগ সত্যি হলে দোষীরা যেমন ছাড়া পাবে না৷ তেমনই অভিযোগ মিথ্যা হলে শাস্তি পাবে অভিযোগকারীরা।’’ বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা (পশ্চিম) জেলার সহ-সভাপতি সুফল ঘাঁটু জানান, যথাযথ তদন্ত হলে অভিযোগ সত্যি বলেই প্রমাণিত হবে।
ছবি: প্রতীম মৈত্র
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.