ধীমান রায়: পেটের তাগিদেই অপরের মনোরঞ্জনের পেশায় নেমেছিলেন তাঁরা৷ কিন্তু তাঁদের চালু করা কার্তিক পুজো এখন কাটোয়ার সবচেয়ে বড় উৎ সব৷ পারিবারিক ও সর্বজনীন পুজো মিলে কাটোয়ায় প্রায় ২০০টি পুজো হয়৷ এই উৎসবের পরম্পরা হল ‘কার্তিকের লড়াই’৷
প্রবাদ আছে, ‘বারবনিতাদের কার্তিক আর বাবুদের লড়াই৷ এই নিয়ে কার্তিকের লড়াই৷’ কাটোয়ায় কার্তিক পুজোর সূচনা প্রসঙ্গে স্থানীয়রা জানান, “ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে কাটোয় শহর বড়সড় বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল৷ গঙ্গানদীর জলপথে নৌকা ও জাহাজ করে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি-রফতানি চলত৷ সে সময় সাহেব, এদেশীয় ব্যবসায়ীরা ব্যবসার স্বার্থে কিছুদিন করে রাত্রিবাসও করতেন কাটোয়ায়৷ ওই বাবুদের মনোরঞ্জনের জন্য চুনুটিপাড়া অর্থাৎ বর্তমান হরিসভাপাড়ায় গড়ে ওঠে একটি পতিতাপল্লি৷ শোনা যায়, ওই পতিতারাই সন্তানলাভের আশায় প্রথম কার্তিক পুজোর সূচনা করেন৷ খরচ জোগাতেন তখনকার বাবুরাই৷ আলোর রোশনাই, বাজনা সবেরই আয়োজন ওই ব্যবসায়ীরা ও সাহেবরা করতেন৷ তখন থেকেই আয়োজনের নিরিখে কাটোয়ার কার্তিকপুজোর একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা চলে আসছে৷ একেই বলে কার্তিকের লড়াই৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাটোয়ার বিভিন্ন সর্বজনীন পুজো কমিটি মিলে অন্তত ৯০টি পুজোর আয়োজন করেন৷ সাবেকি পুজো, পারিবারিক পুজো ও সর্বজনীন পুজো মিলে প্রায় ২০০টি পুজো হয় কাটোয়ায়৷ এখানে কাঠের তৈরি কয়েক ধাপের তাক তৈরি হয়৷ সেখানে বিভিন্ন প্রতিমা সাজানো থাকে৷ পুতুল সাজিয়ে পৌরাণিক কাহিনি ফুটিয়ে তোলা হয়৷ একে স্থানীয়রা ‘থাকা’ বলে৷ বুধবার পুজো৷ বৃহস্পতিবার প্রায় শতাধিক পুজো কমিটি সারারাত শোভাযাত্রা করবেন শহরে৷ কাটোয়ার কার্তিক পুজো ঘিরে পুলিশ-প্রশাসনিক মহলেও তখন সাজ সাজ রব৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.