বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনে স্থগিত ২২ শ্রাবণের অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।
দেব গোস্বামী, বোলপুর: বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনে স্থগিত ২২ শ্রাবণের বৃক্ষরোপণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি কথা মাথায় রেখেই বিশ্বভারতী তড়িঘড়ি সেন্ট্রাল অফিসে বৈঠকে বসে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাংলাদেশ ভবনে বৃক্ষরোপণ-সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হবে। পরিবর্তে উপাসনা গৃহের সামনে পুরনো মেলার মাঠে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বাংলাদেশ ভবনে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রবি ঠাকুরের মৃত্যুবার্ষিকী বাইশে শ্রাবণ প্রতি বছরের মত প্রথা মেনে গৌরপ্রাঙ্গণে বৈতালিক, উপাসনা গৃহে বিশেষ মন্দির, উদয়ন বাড়িতে পুষ্প প্রদান অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। এছাড়াও বাংলাদেশ ভবনে বৃক্ষরোপণ, লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে স্মরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবার সূচি প্রকাশ করে শান্তিনিকেতন কর্মী মন্ডলি। কিন্তু এবার সেই সূচি বাতিল করা হল। পুলিশ প্রশাসনকেও বাংলাদেশ ভবনের নিরাপত্তার জন্য আবেদন জানায় বিশ্বভারতী। এদিন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অরবিন্দ মণ্ডল, কর্মসচিব অশোক মাহাতো-সহ আধিকারিক ও কর্মী মণ্ডলীর সদস্যরা পুরনো মেলার মাঠ পরিদর্শনে আসেন। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অরবিন্দ মণ্ডল জানান,”বাতিল নয়, বাংলাদেশ ভবনে স্থগিত করে পুরনো মেলার মাঠ জগদীশ কাননে হবে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ ভবন বিশ্বভারতীর সম্পত্তি, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তাকর্মীদের নজরদারিতে রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় ২০১৮ সালে ২৫ মে শান্তিনিকেতনে তৈরি হয় বাংলাদেশ ভবন। খরচ হয় প্রায় ৪০ কোটি টাকা। ১৯৯৯ সালে শেখ হাসিনাকে বিশ্বভারতী সর্বোচ্চ সম্মান ‘দেশিকোত্তম’ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ভবনে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তি-সহ মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ছবি, ভাস্কর্য রয়েছে। এছাড়াও প্রেক্ষাগৃহ,সেমিনার হল, গ্রন্থাগার, পড়াশোনার কক্ষ-সহ মুক্তিযুদ্ধ ও নজরুল ইসলামকে নিয়ে গবেষণা করার সুযোগও রয়েছে। বিশ্বভারতীর কর্মী মণ্ডলীর ভ্রমর ভাণ্ডারী জানান,”উপাচার্য মহাশয়কে বাংলাদেশ ভবনের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য বীরভূম জেলা প্রশাসনকেও জানানোর আবেদন জানিয়েছি।”
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে বাংলাদেশের পড়ুয়া রয়েছে প্রায় শতাধিক। পড়ুয়া মহম্মদ আফতারউদ্দিন ও সানজিদা পমি জানান,”দেশের ঘটনার জন্য চিন্তায় রয়েছি। পরিবার-পরিজনদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হোক এটাই প্রার্থনা করছি। তবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও সর্বতভাবে বাংলাদেশি পড়ুয়াদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।” অন্যদিকে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ শিল্পী শ্যামল চৌধুরী নির্মিত বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য জাদুঘরে স্থাপন ও বায়োপিক দেখানোর পরিকল্পনা স্থগিত করেছে। ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত কী হয়, বাংলাদেশের বিদেশ নীতিই বা কী হয়, সেই নির্দেশিকার দিকে তাকিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.