শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: গৃহী সন্নাসিনী! আর পাঁচজনের মতো জীবনচর্যা, চাকরি করেও সন্ন্যাস যাপন। কাম, ক্রোধ আর সীমাহীন লোভ-লালসা থেকে মুক্তির পথের পথিক হতে গেরুয়াবসনা হলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপিকা রুমকি সরকার। নাসিকের অদূরে ত্রৈজ্যোতির্লিঙ্গ তনবোকেশ্বরে মন্দিরের খাড়েশ্বর স্বামীজির দীক্ষা নিয়ে রবিবার রাতে ফিরলেন উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) রায়গঞ্জের বীরনগরের বাড়িতে।
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার গোড়ায় ভূগোলের সহকারী অধ্যাপক পদে যোগ দেন রুমকি সরকার। সম্প্রতি অধ্যাপক পদে উন্নীত হয়ে বর্তমানে ভূগোলের বিভাগীয় প্রধান রুমকিদেবী। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। গবেষণার কাজে খড়গপুর আইআইটিতেও কাজ করেছেন তিনি। অধুনা পূর্ব বধর্মানের সূর্যনগরে আদি বাড়ি। বাবা ছয় বছর আগে প্রয়াত হয়েছেন। মা এবং দাদা অম্লান সরকার পেশায় শিক্ষক এবং বোনও শিক্ষিকা পদে কর্মরত। সুদূর মহারাষ্ট্র থেকে গুরুজির মন্দির থেকে গৈরিকবর্ণা চাদর জড়িয়ে নিয়ে রায়গঞ্জে ফিরেছেন মাত্র সাঁইত্রিশ বছর বয়সী সপ্রতিভ অধ্যাপিকা।
ফিরে রুমকিদেবী বললেন, ‘‘আড়াই মাস আগে একবার নাসিকের গুরুজির সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সেই সময়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আর এই আড়ম্বরপূর্ণ ভোগময় জীবন নয়। এবার একেবারে মুক্তির পথ খুঁজতে হবে। তাই পরিবারের অনুমতি নিয়ে দীক্ষিত হলাম। এখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। তাই বাড়িতে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে ফিরে যাব।’’
গত তিন বছর আগে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক রসায়ন বিভাগের মেধাবী অধ্যাপক বিদ্যুৎ সাঁতরা অধ্যাপকের চাকরি ছেড়ে সন্ন্যাস, জীবনে মুক্তির পথে বেরিয়ে পড়েন। সন্ন্যাসিনীর জীবনে থেকে আবার চাকরিতে কেন? এ প্রসঙ্গে জীবনে পা দেওয়া রুমকিদেবী বলেন, ‘‘এই জীবন সাধনা আরও কঠিন। এটা আমার চ্যালেঞ্জ। ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়েও সন্ন্যাস জীবনে সাধনা কোনও বাধা হবে না।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক অশোক দাস বলেন, ‘‘এখন ছাত্রছাত্রীদের আরও ভাল পড়াতে পারবেন তিনি। তাঁর জীবনে আরও প্রভাবিত হতে পারবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.