শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: পুলিশি হেফাজতে অভিযুক্তের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। বুধবার রাতে শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়া এলাকার ঘটনায় মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, জেরার নামে তাঁকে লাগাতার মারধর করার ফলেই মৃত্যু হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। ঘটনার প্রতিবাদে রাতেই থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক উত্তেজনা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় শিলিগুড়ি কমিশনারেটের পুলিশ বাহিনী, উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। রাতেই দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
সূত্রের খবর, মৃতের নাম ব্যাচন রায়, বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। তিনি মাটিগাড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঠক্করের বাসিন্দা। এলাকায় বেআইনিভাবে মদ বিক্রি করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। থানায় জেরা শুরু হয়। এরপর বিকেল নাগাদ তিনি অসুস্থ বোধ করতে থাকায় মাটিগাড়া ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনই সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের সদস্যদের সেই খবর দেওয়া হলে পরিবারের সদস্য এবং শতাধিক প্রতিবেশী মিলে মাটিগাড়া থানা ঘেরাও করে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়। বুধবার রাত পর্যন্ত থানা ঘেরাও করে রাখা হয়। জেরার নামে মারধর করার ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগে সরব তাঁরা। মৃতের দাদা সুকুমার রায় বলেন, “দুপুরে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে পুলিশ। ছাড়াতে ২০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছিল। তা দিতে না পারায় থানায় মারধর করা হয়। পরে ফোন করে খবর দেয় যে ভাই হাসপাতালে ভরতি। গিয়ে দেখি, ভাই মারা গিয়েছে।”
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (জোন ২, পশ্চিম) কুমার ভূষণ সিং জানান, “মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। অভিযুক্তকে যেখানে রাখা হয়েছিল সেখানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তবে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশের একাংশের দাবি, গ্রেপ্তার সময় অভিযুক্ত মদ্যপ অবস্থায় ছিল। থানায় নিয়ে আসার পর অভিযুক্ত শারীরিক অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মদ্যপ অবস্থায় থাকার কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছে। পালটা পরিবারের দাবি, গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার পর ওই ব্যক্তির কাছে ২০ হাজার টাকা ঘুষের দাবি করেছিল। তা দিতে না পারার ফলেই ব্যাচন রায়কে পুলিশের হেফাজতে বেধড়ক মারধর করেন পুলিশ কর্মীরা। আর সেই কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ বোঝা যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.