স্টাফ রিপোর্টার: ভাইফোঁটা পেরোতেই হাফ সেঞ্চুরির দিকে আলুর দাম। এতদিন ৪৫ টাকায় মিলছিল এক কিলো চন্দ্রমুখী। ক্রমশ তা বাড়তে বাড়তে বুধবার তা ৪৮-এ গিয়ে ঠেকেছে। জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagadhatri Puja) মধ্যেই কি তা পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলবে? এটাই এখন প্রশ্ন আমজনতার।
ছটপুজোর (Chhath Puja 2020) প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যে। ভরা উৎসবের মরশুম। শীতের সবজি বাজার দখল করতে শুরু করেছে। সাধারণত এই সময়ই মরশুমি ফসল-সহ আলু-পিঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম প্রথমে কিছুটা বাড়ে। নিয়মমতো পরে তা কমতে থাকে। সঙ্গে ঢোকে নতুন আলু। কিন্তু এবার আর দাম কমার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। চন্দ্রমুখীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জ্যোতি আলুর দামও। কোথাও ৪২, কোথাও ৪৫-এ বিকোচ্ছে। নতুন আলু বিকোচ্ছে ৭০ টাকায়।
আলুর দাম কি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না? “আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছি”, বলছেন বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠিত রাজ্য টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে। তাঁর যুক্তি, “ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমরা প্রতিনিয়ত কথা বলছি। যাতে দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা যায় তার জন্য সবরকম চেষ্টা চলছে।” ব্যবসায়ীরা যদিও নতুন কৃষিবিলের প্রসঙ্গ টেনেই এই দাম বৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি দিচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন কমলবাবু। ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা আলুর জোগান কম বলে দেখাচ্ছে। অথচ, তেমনটা হওয়ার কথা নয় বলেই জানাচ্ছে সরকারপক্ষ। সেক্ষেত্রে আলু হিমঘরে মজুত করেই অল্প করে তা ছাড়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই টাস্ক ফোর্সের ওই সদস্য জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এমন থাকবে না। নতুন আলু উঠতে আর দিন পনেরো। তার পরই দাম কমতে থাকবে আলু-সহ সমস্ত সবজির। এই মুহূর্তে বাজারে যে নতুন আলু পাওয়া যাচ্ছে তা রাঁচি ও পাঞ্জাবের। কমলবাবুর কথায়, “ডিসেম্বরেই বাংলার নতুন আলু বাজারে আসবে। আর সেগুলো যেহেতু কাঁচা আলু তা একদিন জমিয়ে রাখলেই শুকিয়ে যেতে শুরু করে। সেই কারণেই হিমঘর মালিকদের তা ছেড়ে দিতে হবে। আর সেই কারণেই দামও বেশি নিতে পারবেন।” কিন্তু চন্দ্রমুখী নিয়ে কি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা জানাচ্ছেন, নতুন আলুর কথা ব্যবসায়ীদেরও মাথায় আছে। তাঁরাও নিশ্চয়ই আলু হিমঘরে মজুত রেখে বেশিদিন দাম বাড়িয়ে তা বেচতে পারবে না। তবে শুধু আলুই নয়, সবজির দামেও লাগাম নেই। বেড়েই চলেছে দাম। বাতাসে হিমের পরশ আসার পরও শীতকালীন সবজিতে হাত দিলে ছ্যাকা লাগছে। সিম, বেগুন, বাঁধাকপি বা টম্যাটো, সবই এখনও ৫০ থেকে ৬০-এর ঘরে। কাঁচা লঙ্কার ঝাঁঝও কমেনি। অর্থাৎ আলু হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানোর পথে যখন যাচ্ছে, তখন তাকে অনুসরণ করছে সবজিকুলও। ফলে এই শীতেও বাজারে গেলে ঘাম ঝড়ছে বাঙালির। আর সবজি ব্যবসায়ীরা নতুন করে তুলছেন ছট পুজোর অজুহাত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.