জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার আরবেলিয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বসুবাড়ির পুজো অর্থাৎ অভিনেতা বিশ্বনাথ বসুর বাড়ির দুর্গাপুজো। প্রতিবছর এই পুজোয় ঘিরে দেখা যায় সম্প্রীতির ছবি। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ জড়ো হন বসুদের ভিটেয়। পুজোর পাশাপাশি চলে নাচ-গান-আড্ডা। এবছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। চলতি বছরে করোনার কারণে বেশ কিছু নিয়ম পালন করা হবে ঠিকই, তবে তাতে পুজোর আনন্দ ম্লান হবে না বলেই আশাবাদী বসু পরিবারের সদস্যরা।
আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে জমিদার অশোকনাথ বসু শুরু করেন এই পুজো (Durga Puja 2020)। সেই থেকে প্রতিবছর বসু পরিবারে পুজিতা হয়ে আসছেন দশভূজা। রথের দিন কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু। এরপর ইছামতীর মাটি আর গঙ্গাজলে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে মূর্তি। ষষ্ঠীতে বোধন দিয়ে শুরু পুজোর। নবমীর দিন সাতটি বলি হয় বসুবাড়িতে। দশমীতে ২৪ জন বেয়ারা কাঁধে করে বসুপরিবারের প্রতিমা নিয়ে যায় ইছামতিতে বিসর্জনের জন্য। এই দিন গ্রামের সাতটি প্রতিমা এক সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় বিসর্জনে। প্রথমে থাকে বসুবাড়ির প্রতিমা, এরপর থাকে বাকি গুলো। গ্রামের পাশাপাশি দুরদুরান্তের বহু মানুষ সাক্ষী থাকেন এই বিসর্জনের।
বসু পরিবারের সদস্যদের কথায়, “বাড়ির পুজো দেখতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ আসেন। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ পুজোর ক’টা দিন আনন্দ উপভোগ করেন৷ আত্মীয়-স্বজন যেখানেই থাক পুজোর কটাদিন সকলে একসঙ্গে। সিনেমা জগতেরও বহু মানুষও আসেন।” এক সদস্য জানান, অতীতে মোষ বলি দেওয়া হত। পরিবর্তীকালে পাঁঠা বলির প্রচলন শুরু হয়। মাংস রান্না করে প্রসাদ হিসাবে আশেপাশের গ্রামে বিলি করা হয়। সমস্ত ধর্মের মানুষ এই প্রসাদ গ্রহণ করে।” সব মিলিয়ে এক অন্যরকম আমেজ তৈরি হয় এই চারদিনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.