টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার (Bankura) জঙ্গলে সন্ধান মিলল আদিম এক গুহার। পাহাড়ের বুকে প্রায় ২০০ ফুট দীর্ঘ প্রাচীন গুহার খবর জেনে চূড়ান্ত বিস্মিত স্থানীয় বাসিন্দারা। আদিম মানুষের বাসস্থান ছিল এটি, গুহার (Cave) আকার-আয়তন দেখে এমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গুহাটি কিছু দূর গিয়ে ভাগ হয়ে গিয়েছে। ওই দু’দিকে মোট ৭টি কুঠুরি পাওয়া গিয়েছে। তবে এখানে সত্যিই আদিম মানুষ বসবাস করত কি না, তার পক্ষে আরও জোরাল প্রমাণ প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।
রানিবাঁধ (Ranibadh) এলাকার খাতড়া ব্লকের জঙ্গলমহলে পোড়া পাহাড়ের মাঝামাঝি এলাকায় এই গুহার সন্ধান মিলেছে। গুহার মুখ পাহাড়ের উত্তর দিকে। গুহার উচ্চতা ৬ ফুট। চওড়ায় তা ৪-৫ ফুট। কিছু দূর গিয়ে ওই গুহা ভাগ হয়ে গিয়েছে দুই দিকে। ডানদিকে সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ ফুট। তারপর সুড়ঙ্গের ওই অংশ চলে গিয়েছে পাহাড়ের ভিন্ন প্রান্তে। সে দিকেও একটি মুখ রয়েছে গুহাটির। কিন্তু বাঁ দিকের অংশটি প্রায় ২০০ ফুট দীর্ঘ। সুড়ঙ্গের এই অংশে দু’দিকে মোট সাতটি কুঠুরি রয়েছে। যা লম্বা এবং চওড়ায় যথাক্রমে ২০ ফুট ও ৭ ফুট।
তবে রানিবাঁধের বিধায়ক তথা মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি জানাচ্ছেন, ”বছর দুয়েক আগে গিয়ে আমি ওই পাহাড়ের উপর উঠে গুহাটি দেখে এসেছি। ওই গুহায় বর্তমানে শিয়াল-সহ একাধিক বন্যপ্রাণী আশ্রয় নিয়েছে।” জানা গিয়েছে, ওই পাহাড়ে একটা সংস্থা ইউরেনিয়াম (Uranium) সংগ্রহের কাজ শুরু করে বছর দশেক আগে। কিন্তু মাঝপথে সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকেই ওই পাহাড়ে গুহার আকার নিয়েছে ওই অংশটি। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। গুহার অবস্থান নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জিত মান্ডি বলেন, ”পাহাড়ের উত্তর দিকে অর্ধচন্দ্রাকার রাস্তা চলে গিয়েছে। ওই রাস্তা ধরে পাহাড়ের উপরে উঠলেই এই গুহার দর্শন মিলবে।”
ইতিমধ্যেই খবর পাঠানো হয়েছে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব সমীক্ষার (ASI) অফিসে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গুহাটি ভালভাবে দেখে তবেই বলতে পারবেন, সেখানে আদৌ আদিম মানুষজন থাকত কি না। থাকলে কীভাবেই বা জীবনযাপন করত, সেসবই জানা যাবে বলে আশাবাদী তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.