চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: শারীরিক সম্পর্কে নারাজ হওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে নিয়ে গ্রামে বসল সালিশি সভা৷ মাতব্বরদের নিদান মেনে গুনে গুনে ৫০ বার ওঠবোস করলেন অন্তঃসত্ত্বা৷ ঘটল নির্মম পরিণতি৷ নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণ৷ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন ওই মহিলা৷ এই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের রানিচক৷ আপাতত হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালেই ভরতি রয়েছেন ওই গৃহবধূ৷ সুতাহাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ তবে এখনও গ্রেপ্তার হননি কেউই৷
হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের রানিচক গ্রামের বাসিন্দা ওই গৃহবধূ৷ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পাড়ার কলে জল আনতে গিয়েছিলেন তিনি৷ অভিযোগ, গ্রামের দু’জন মাতব্বর শারীরিক সম্পর্ক তৈরির প্রস্তাব দেয় গৃহবধূকে৷ প্রস্তাবে রাজি হননি তিনি৷ সেই বিবাদেরই নির্মম রূপ দেখল গোটা গ্রাম৷ ওই গ্রামে সালিশি সভার আয়োজন করা হয়৷ মাতব্বরদের সামনে ডেকে পাঠানো হয় পরিবারের সদস্যদের৷ জড়ো হন সকলেই৷ দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেন মাতব্বররা৷ অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলাকে ওঠবোস করার নিদান দেয় তারা৷ এহেন শারীরিক অবস্থায় তাঁর পক্ষে নিদান মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলেই জানান গৃহবধূ৷ লাভ হয়নি কিছুই৷ তাতেও রাজি হননি মাতব্বররা৷ জোর করে ওঠবোস করানো হয় অন্তঃসত্ত্বাকে৷ গুনে গুনে ৫০ বার ওঠবোস দেন মহিলা৷ ঘটনাস্থলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি৷ সুযোগ বুঝে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় মাতব্বররা৷
রক্তাক্ত অবস্থায় পরিজনেরা গৃহবধূকে উদ্ধার করেন৷ তড়িঘড়ি হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে৷ গৃহবধূর পরিবারের দাবি, গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁর৷ এই ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন গৃহবধূ৷ এই ঘটনায় সুতাহাটা থানার দ্বারস্থ গৃহবধূর পরিজনেরা৷ ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সুতাহাটার বিডিও সঞ্জয় শিকদার৷ অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি৷ যদিও এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.