সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোট থেকেই বেশ চুপচাপ। কারও সঙ্গে বেশি কথা বলত না। পরিজন কিংবা প্রতিবেশী সকলের কাছে লাজুক বলেই পরিচিত ছিল মেয়েটা। তবে পাড়ার পুজোয় অংশ নিত। প্রত্যেক পুজোয় উপোস সে করবেই। কিন্তু আচমকা আসা একটা ফোনেই বদলে গেল হুগলির ধনেখালির কেসবাপুরের বাসিন্দা প্রজ্ঞার জীবন। প্রজ্ঞাই হয়ে উঠল আয়েশা জান্নাত মোহনা। আর বাড়ি ফিরে আসেনি জঙ্গি প্রজ্ঞা (Pragya) ওরফে আয়েশা। গ্রেপ্তারির পর আবার মেয়ের খোঁজখবর জানতে পারলেন তার বাবা-মা।
দিনটা ছিল ২০১৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। সেদিনই হঠাৎ প্রজ্ঞার কাছে একটি ফোন। তবে কার সঙ্গে কথা বলে, সে বিষয়ে বাড়িতে কিছু জানায়নি। ফোনে কথাবার্তা বলার পর সে জানায় কলকাতায় যাবে। প্রায় কারও মতামত না নিয়েই কলকাতায় চলে আসে প্রজ্ঞা। দু’দিন পর বাড়িতে ফোন করে। জানায় ধর্মান্তরিত হয়েছে সে। তার ইসলাম ধর্মগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাড়ির সকলে মেনে নিলে তবে ধনেখালিতে ফিরবে বলে শর্ত দেয় প্রজ্ঞা। তবে তার মা জানিয়ে দেন, আচমকা ধর্মান্তরিত হওয়ার সিদ্ধান্তকে তিনি সমর্থন করেন না। তাই আর বাড়ি ফিরতে হবে। তারপর থেকে বাড়ির সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ রাখেনি প্রজ্ঞা ওরফে আয়েশা জান্নাত মোহনা।
শুক্রবার ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে ২৫ বছরের প্রজ্ঞা দাস ওরফে আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুল তাসনিমকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ পুলিশের জঙ্গিদমন শাখা। পুলিশ জানিয়েছে, কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন নিও জেএমবির জন্য অনলাইনে সদস্য জোগাড় করত আয়েশা। শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালে সংগঠনটির মহিলা শাখার প্রধান আসমা খাতুন গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেই দায়িত্ব বর্তায় আয়েশার কাঁধে। আদতে হিন্দু ওই তরুণী ২০০৯ সালে জেহাদিদের অনলাইন ফাঁদে পা দেয়। তার যোগাযোগ হয় নিও জেএমবির মহিলা শাখার প্রধান আসমা খাতুনের সঙ্গে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে প্রথম বাংলাদেশ যায় প্রজ্ঞা ওরফে আয়েশা। তারপর থেকে বেশ কয়েকবার ভারত থেকে আসা যাওয়া করত সে। অবশেষে ২০১৯ সালে পাকাপাকিভাবে বাংলাদেশে থাকতে শুরু করে। জাল বার্থ সার্টিফিকেট ও নাগরিকত্বের পরিচয়পত্রও জোগাড় করে। সন্দেহ এড়াতে, ওমানের এক বাংলাদেশি নাগরিককে অনলাইনে বিয়ে করে। বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য ভুয়ো কাগজপত্রও তৈরি করে। ঢাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীর অপর পাড়ে কেরানীগঞ্জ থানার একটি মাদ্রাসায় সে শিক্ষকতা শুরু করে। শিক্ষকতার আড়ালে অনলাইনে জঙ্গি কার্যক্রমে মহিলাদের নিযুক্ত করত আয়েশা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.