দেবব্রত দাস, ইন্দাস: বিবাহিত জীবনের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষের দিনে অন্যরকম অনুভূতির ছোঁয়া পেলেন বাঁকুড়ার ইন্দাসের বাসিন্দা বৃদ্ধ দম্পতি। রবিবার ছিল প্রভাসচন্দ্র দত্ত ও অণিমা দত্তের বিয়ের ৫০ বছরের পূর্তি। সেই উপলক্ষে ফের একবার তাঁদের বিয়ে দিলেন ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনীরা। এদিন নতুন করে বিয়ের সাজে রাঙিয়ে তোলা হল প্রভাসচন্দ্রবাবু ও অণিমাদেবীকে। বর-কনের সাজে নতুন করে সেই পুরানো দিনের স্মৃতিতে ডুব দেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি।
ইন্দাসের ডিভিসি অফিস লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা প্রভাসবাবু ও অণিমাদেবী। ৭৮ বছরের প্রভাসবাবু পেশায় ছিলেন পুলিশকর্মী। তাঁদের দুই ছেলে প্রণবাশিস ও মানবাশিস এবং এক মেয়ে শ্রাবণী। ৫০ বছর আগে আজকের দিনেই প্রভাসবাবুর সঙ্গে অণিমাদেবীর বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের আনুষ্ঠানিক সমস্ত ক্রিয়াকর্মই এদিন করা হল। ভোরে জল সইতে যাওয়া। পড়শিদের এয়ো দান। দুপুরে শতাধিক মানুষের ভুরিভোজ। পরে মাথায় টোপর পরিয়ে বর বেশে প্রভাসচন্দ্রবাবু ও কনের সাজে সাজলেন অণিমাদেবীও। হল মালা বদলও। চলল দেদার মিষ্টিমুখ। আর অভিনব এই উদ্যোগ নজর কাড়ল এলাকাবাসীর।
কেন এমন অভিনব আয়োজন?
প্রণবাশিসবাবু বলেন, “এদিন বাবা-মায়ের ৫০তম বিবাহবার্ষিকী ছিল। পরিবারে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। তাই এই বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মায়ের বিয়ের দিনটিকে একটু স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যেই আলাদা রকমের আয়োজন করা হয়েছিল। এর মূল কান্ডারী আমার ভাই মানবাশিস ও ভাগনা অভিরূপ। মূলত ওঁদের জন্যই এদিন বাবা মায়ের এই বিবাহবার্ষিকী জাঁকজমক করে পালিত হল।” প্রভাসবাবুর নাতি অঙ্কিত, অভিরূপ, নাতনি প্রত্যুষা, অন্বেষা দাদু-দিদিমার বিবাহবার্ষিকীতে আনন্দে ডগমগ।
অভিরূপ বলে, “বিয়ের ৫০ বছর পার করাটা ভাগ্যের ব্যাপার। যখন জানলাম আমাদের দাদু-দিদিমার এদিন ৫০ তম বিবাহবার্ষিকী তখন একটু অন্যরকম অনুষ্ঠান করার ইচ্ছে ছিল। এদিন আমরা সকলে মিলে সেটাই করলাম। দাদু দিদিমাকে নতুন সাজে সাজাতে পেরে আমরা খুব খুশি।” প্রভাসবাবু ও অণিমাদেবী সলাজ হাসিতে বললেন, “ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি সবাই আমাদের ভীষণ ভালবাসে। আমাদের বিয়ের দিনটিকে স্মরণীয় করতে ওদের এই ইচ্ছেতে তাই আমরা বাধা দিইনি। ওরা আমাদের নতুন করে বর—কনে সাজিয়েছে। আমরা খুব আনন্দিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.