ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আবেদন মেনে পৌষমেলার নিরাপত্তায় বাহিনী পাঠাল কেন্দ্র। দিল্লির নির্দেশে বৃহস্পতিবারই শান্তিনিকেতনে পৌঁছেছে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ১০০ জন নিরাপত্তারক্ষীর একটি দল। প্রত্যেকেই ভারতীর সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। পৌষমেলা শুরু হলে, জেলা পুলিশের সঙ্গে এদের মেলা প্রাঙ্গনে মোতায়েন করা হবে। শুক্রবার থেকেই এই বাহিনীর সদস্যরা কাজ শুরু করে দেবেন বলে খবর।
চলতি মাসের ২৮-২৯ ডিসেম্বর মেলা তুলতে এদের বিশেষভাবে ব্যবহার করা হবে। পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করবে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা বিভাগ।বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দুয়েক আগে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী আচার্য তথা প্রাধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তরে পৌষমেলার নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে আবেদন করেছিলেন।কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুসারে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মেলা শেষ করতে হবে। তাই এবার ৬ দিনের পরিবর্তে চার দিন মেলা চলবে, এবং স্টল তুলে মেলা প্রাঙ্গন ফাঁকা করে দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত দু’দিন সময় দেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
এবছর শান্তিনিকেতনে পৌষ মেলা শুরু হচ্ছে ২৪ ডিসেম্বর এবং শেষ হচ্ছে ২৭ ডিসেম্বর। ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মেলা প্রাঙ্গন ফাঁকা করে দিতে হবে ব্যবসায়ীদের। ২০১৮ সালে মেলার সমাপ্তিতে স্টল তুলে দেওয়া নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব বাঁধে। সে কথা মাথায় রেখে এবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে প্রথম দিন থেকেই সক্রিয়। প্রথমে নিরাপত্তার কথা ভেবে মেলা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী, আশ্রমিক এবং বুদ্ধিজীবীরা আবেদন জানায়, পৌষমেলা বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। তাই এই মেলা বন্ধ করা যাবে না।
এমনকী বিশ্বভারতীর কোর্ট সদস্য তথা বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত সংসদ ভবনে পৌষমেলার বিষয়টি উত্থাপন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বভারতীকে পৌষমেলা করার নির্দেশ দেন, প্রধানমন্ত্রী দপ্তর এই বিষয়ে সহায়তা করবে বলেও আশ্বাস দেন। স্টল বুকিং নিয়ে দুর্নীতি আটকাতে বিশ্বভারতীর আবেদনের ভিত্তিতে খড়গপুর আইআইটিকে সফটওয়্যার তৈরির নির্দেশ দেয় প্রধানমন্ত্রী দপ্তর। এবার প্রায় ১৬০০ স্টল থাকবে মেলাতে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ৬০০ স্টল বুকিং হয়েছে।
বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ জন নিরাপত্তারক্ষী শুক্রবার সকাল থেকে মেলা প্রাঙ্গনে টহলদারি শুরু করেছে। একইভাবে মেলা প্রাঙ্গনে উপাচার্যের যে অস্থায়ী অফিস তৈরি হচ্ছে, সেখানেও তাঁদের মোতায়েন করা হবে। ২৪ তারিখ মেলা শুরু হলে, নিরাপত্তারক্ষীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে মেলা পাহারা দেবেন। মেলার চারদিন জেলা পুলিশের প্রায় তিন হাজার কর্মী থাকলেও, ২৮ তারিখ থেকে কোনও পুলিশ থাকবে না। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার কোনও মন্তব্য করতে নারাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.