দেব গোস্বামী, বোলপুর: কাটল দীর্ঘদিনের তিক্ততা, লড়াই। শান্তিনিকেতন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা পাওয়ার পর অবশেষে মিলেমিশে গেল জেলা প্রশাসন ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। চার বছর পর এবার হাতে হাত ধরে পৌষমেলার (Poush Mela) আয়োজন করেছে উভয় পক্ষ। সোমবার থেকে পূর্বপল্লির মাঠে শুরু হল পৌষমেলা। আর শুরুতেই তা হয়ে দাঁড়াল মিলনক্ষেত্র। এদিন সকালে বৈতালিকের মাধ্যমে বোলপুরে সূচনা হল পৌষমেলা। উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিনয়কুমার সোরেন, বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। ১৮০০ দোকান নিয়ে শুরু হল মেলা। চলবে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এতদিনের ঐতিহ্য মেনে গৌর প্রাঙ্গণএ ভোরবেলা বৈতালিক, সানাই, উপাসনার মাধ্যমে সূচনা হল ১৮১ তম পৌষ উৎসব। শান্তিনিকেতনের সর্বস্তরের মানুষজন উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে। পুরুষরা ধুতি-পাঞ্জাবি-শাল ও মেয়েরা সকলে লাল-সাদা শাড়িতে সেজে প্রথমে প্রণাম ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন গুরুদেবের উদ্দেশে। দিনভর নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৬টায় উদয়ন বাড়ি ও ছাতিমতলায় হবে আলোকসজ্জা। পুরোদমে পৌষমেলার স্বাদ নিতে ইতিমধ্যেই সেখানে হাজির হয়েছেন বহু পর্যটক। বাউল গান, নাচের পাশাপাশি মেলায় আকর্ষণীয় সব হস্তশিল্পের অফুরান সম্ভার।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিনয়কুমার সোরেন বলেন, ”আজ থেকে মেলা শুরু হল। আমরা একসঙ্গে মিলে এবার মেলার আয়োজন করেছি। খুবই আনন্দের বিষয়। আশা করি, সবাই মেলা উপভোগ করবেন। নিয়মমতো প্রতিদিন যা যা হওয়ার, সেসব অনুষ্ঠান হবে।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখকেও আজ দেখা গেল ভিন্ন ভূমিকায়। বৈতালিক, সানাই অনুষ্ঠানে বিশ্বভারতীর অন্যান্য বিশিষ্টদের সঙ্গে ছিলেন তিনিও। তাঁর কথায়, ”এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ যে কতটা আনন্দের, গর্বের তা এখানে না এলে বোঝা যাবে না। জেলা প্রশাসন, বিশ্বভারতী সবাই মিলেমিশে এবারের ১৮১ তম পৌষ উৎসবের আয়োজন করেছি ঐতিহ্যবাহী পূর্বপল্লির মাঠে। ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলবে।” বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরাও মেলার আয়োজন দেখে আপ্লুত। সকলের মুখে একটাই কথা, ৪ বছর পর আবার আগের মতো ফিরল মেলার ঐতিহ্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.