সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীপাবলিতে সারা দেশে যখন আলোর অপেরা, তখন যেন অনেকটা অন্ধকারেই থাকতেন মৃৎশিল্পীরা৷ চিনা আলোর দাপুটে ব্যাটিংয়ে অনেকটাই কোণঠাসা ছিল তাঁদের হাতে গড়া মাটির প্রদীপ৷ শ্রম আর খরচ মিলিয়ে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করতে হয় এই শিল্পে, বিক্রির স্বল্পতায় তা পূরণ হত না৷ ফলত ক্রমশ ধুঁকছিল দেশের মৃৎশিল্প৷ তবে এ বছরের ছবিটা একেবারে অন্যরকম৷ চিনা দ্রব্য বয়কটের ডাকে হু হু করে বাড়ছে মাটির প্রদীপ বিক্রি৷ আর তাতেই আশার আলোয় মৃৎশিল্পীরা৷
ভারত-চিন সম্পর্কে অবনতি হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠে চিনা দ্রব্য বয়কটের ডাক৷ সরকারি স্তরে সরাসরি কোনও বিবৃতি দেওয়া না হলেও সাধারণ মানুষের প্রবল ক্ষোভ দেখা দেয় বাস্তবে৷ আর তার ফলেই কমতে থাকে চিনা সরঞ্জামের চাহিদা৷ বিশেষত দীপাবলির প্রাক্কালে এই বয়কটের ডাকে অশনি সংকেত দেখেন স্থানীয় বিক্রেতারা৷ চিনা বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম ভারতে চলে এলেও মানুষ তা কিনবেন কি না, এই ভেবেই দোকনদাররা তা মজুত করতে নারাজ৷ কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স-এর তথ্য অনুযায়ী এই বয়কটের ডাকে চিনা দ্রব্য বিক্রি কমেছে অন্তত ৪৫ শতাংশ৷ আর তা পরিপূরক হয়ে উঠেছে দেশের মৃৎশিল্পে৷ হু হু করে বাড়ছে মাটির প্রদীপের চাহিদা৷ আর তা পূরণ করতে দিনরাত এক করেছেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মৃৎশিল্পীরা৷ কানপুরের বেশ কয়েকজন মৃৎশিল্পী জানাচ্ছেন৷ চিনা আলোর কারণেই প্রদীপের বিক্রি প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল৷ এ বছর আবার অর্ডার আসছে৷ একই ছবি পাটনাতেও৷ সেখানকার এক মৃৎশিল্পীর কথায়, আগে প্রায় এক লক্ষ প্রদীপ তৈরি করতেন তিনি৷ নাওয়া-খাওয়ার ফুরসুত ছিল না৷ কিন্তু চিনা আলোর দাপটে সে দিন গিয়েছিল৷ তবে এ বছর যেন পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল৷ ব্যতিক্রম নয় পশ্চিমবঙ্গও৷ রাজ্য জুড়ে বিশেষত রাঙামাটি এলাকার মৃৎশিল্পীদের ঘরে খুশির আলো৷
দীপাবলীর ঠিক আগে তাই অবসর নেই মৃৎশিল্পীদের ঘরে ঘরে৷ চাহিদার জোগান দিতে এনেকেই সনাতন পদ্ধতি ছেড়ে যন্ত্রের সাহায্য নিচ্ছেন মাটি তৈরিতে বা পোড়ানোর ক্ষেত্রে৷ তবে বয়কটের জেরে যে বিগত কয়েক বছরের খরা কেটেছে, তাতেই যেন অকাল দীপাবলি নেমে এসেছে মৃশিল্পীদের ঘরে ঘরে৷
Our problems will be solved only when ppl boycott Chinese goods. We are hopeful that maybe this year we might be able to do business: Potter pic.twitter.com/rKYA56KGLL
— ANI UP (@ANINewsUP) October 26, 2016
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.