ফাইল ছবি।
সম্যক খান, মেদিনীপুর: মন্ত্রীর সঙ্গে আলু ব্যবসায়ীদের বৈঠক সফল হয়েছে। উঠে গিয়েছে ধর্মঘট। তার পরও বাজার স্বাভাবিক হল না। অধিকাংশ বাজারে আলু এখনও অমিলই থেকে গিয়েছে। যে দু-একটি বাজারে কিছু আলু পাওয়া গিয়েছে তারও দর আকাশছোঁয়া। আগে থেকে মজুত রেখে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে আলু বিক্রি করছেন। আলু ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সম্পাদক বরুণ পণ্ডিত বলেন, “গত কয়েকদিন ধর্মঘটের জেরেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার থেকেই বাজার স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।”
আলু ভিনরাজ্যে রপ্তানির ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ নেয় সরকার। ভিনরাজ্যের সীমান্তে আলুর গাড়ি আটকে দেওয়ার প্রতিবাদেই আলু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট শুরু করে দেন। তাঁদের লাগাতার ধর্মঘটের জেরে বাজারে আলুর আকাল দেখা দেয়। সুযোগ বুঝে কিছু ব্যবসায়ীও আলুর দর বাড়িয়ে ফেলেন। আলু ব্যবসায়ী সমিতির অভিযোগ, জেলা তথা রাজ্যে যে আলু উৎপাদন হয় তার মাত্র একাংশ এরাজ্যের মানুষের চাহিদা মেটায়। পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি আলু ভিনরাজ্যে রফতানি করেই বেঁচে আছেন আলু ব্যবসায়ীরা। কিন্তু যেভাবে সীমান্ত এলাকাগুলিতে আলুবোঝাই গাড়ি আটকানো হচ্ছে তাতে লাটে উঠবে আলুব্যবসা। এক একটি লরিতে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকার আলু থাকে। আলু পচনশীল। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলে আলু পচে যেতে বাধ্য। সর্বস্ব হারাবেন ব্যবসায়ীরা।
গত বুধবারই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায় তা নিয়ে মন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে বৈঠক করেন প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্তারা। মন্ত্রীর অনুরোধে জট খোলে। ওই বৈঠকে হাজির জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বরুণ পণ্ডিত জানান, মন্ত্রী তাঁদের অনুরোধ করেছেন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে বাজার স্বাভাবিক করার জন্য। সমিতির দাবিগুলি বিবেচনা করবে সরকার। মন্ত্রীর আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবারও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বাজারে আলু প্রায় দেখা যায়নি বললেই চলে। বরুণবাবু আরও বলেন, বুধবার পর্যন্ত ধর্মঘট থাকায় হিমঘরগুলিতে আলু বাছাই ও লোডিংয়ের কোনও কাজ হয়নি। বৃহষ্পতিবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার থেকে বাজার স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।
বরুণবাবুর দাবি, তাঁরা সরকারকে রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী যত আলু প্রয়োজন তা কেজি প্রতি ২৪ টাকা দরে দিয়ে দিতে রাজি। কিন্তু তাঁদের ভিনরাজ্যে রপ্তানিতে যেন কোনও বাধা তৈরি করা না হয়। এদিন অবশ্য বাজারে আলুর সংকটের কথা মাথায় রেখে মেদিনীপুর পুরসভার পক্ষ থেকে স্বসহায়ক দলের মাধ্যমে একাধিক কাউন্টার খুলে এক একজনকে ২৮ টাকা কেজি দরে দুই কেজি করে আলু বিক্রি করা হয়। পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ী বা ফড়েরা যাতে মানুষকে ঠকাতে না পারে সেজন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.