দেবব্রত দাস, খাতড়া: করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। এই অবস্থায় সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজন। তবে তাঁদের পাশেও রয়েছেন কেউ না কেউ। এই দুর্দিনে দরিদ্র মানুষজনের মুখে অন্ন তুলে দিতে নিজের সারা বছরের রোজগারের অর্থ খরচ করে দিচ্ছেন বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের এক পোস্টমাস্টার। স্থানীয় হাটকৃষ্ণনগর পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার সুব্রত চট্টোপাধ্যায় নিজের বেতনের সবটুকু টাকা দিয়ে চাল-ডাল কিনে এলাকার গরিব, প্রান্তিক মানুষদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। আর তাতেই দুশ্চিন্তার ভার কিছুটা লাঘব হচ্ছে এঁদের।
PM-CARES বা মুখ্যমন্ত্রীর আপৎকালীন ত্রাণ তহবিলে অর্থ দান করে নয়, নিজের এলাকায় অসহায়, দুস্থ মানুষদের জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছেন পাত্রসায়ের থানার হাটকৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। পেশায় পোস্টমাস্টার সুব্রতবাবুর কথায়, “লকডাউনের জন্য আমাদের এলাকায় বহু মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। তাই আমি সামান্য চেষ্টা করছি ওঁদের পাশে থাকার। মানুষ হিসাবে এটা আমার কর্তব্য বলে মনে করি।” ছেলের এই কাজে রীতিমত গর্বিত মা চাঁপা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, “এই দুর্দিনে সবাই ভাল থাকুক, এটাই আমরা চাই। তাই ছেলে যখন ওর বেতনের সব অর্থ গরিবদের খাদ্যসামগ্রী কেনার জন্য দেবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আমরা কেউ আপত্তি করিনি।”
হাটকৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা সুব্রতবাবুর এই কাজে খুশি এলাকার বাসিন্দারাও। গ্রামবাসী কল্পনা রুইদাস, সুনীল ঘোষদের মতে, “এমন দুর্দিনে সুব্রতবাবু যা করছেন, তার তুলনা নেই।” করোনা আবহে দেশজুড়ে যখন দফায় দফায় লকডাউন চলছে, বেড়েই চলেছে গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ, তখন এই পাত্রসায়রের হাটকৃষ্ণনগরের মতোই দেশের প্রান্তিক এলাকা দরিদ্র অসহায় মানুষের কাছে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন পোস্টমাস্টার সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতো মানুষ আছেন বলেই হয়ত এখনও সমাজের আর পাঁচজন মানুষ কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়ে যাওয়ার শক্তি পান, সাহস রাখেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.