প্রায় ৭২ ঘণ্টা হতে চলল, বাংলার বুকে ধ্বংসলীলা চালিয়ে বিদায় নিয়েছে আমফান। কিন্তু এখনও প্রায় প্রতিটি প্রান্তে রয়ে গিয়েছে তার ক্ষতচিহ্ন। যা মেরামতিতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আমফান এ রাজ্যে অন্তত ৮৬ জনের প্রাণ কেড়েছে। হেক্টরের পর হেক্টর জমির ফসল নষ্ট, অসংখ্য ঘরবাড়ি ভেঙে পড়া-সহ কতশত যে ক্ষতি হয়েছে, তার হিসেব এখনও বোধহয় করে ওঠা সম্ভব হয়নি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অংশের পাশাপাশি বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত কলকাতায়। জল সরবরাহেও ব্যাপক ঘাটতি। লকডাউনের মাঝেই দুর্যোগ পরিস্থিতি সশরীরে দেখতে দিল্লি থেকে বাংলায় ছুটে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। হেলিকপ্টারে তা পরিদর্শনের পর প্রাথমিকভাবে ১ হাজার কোটি টাকা সাহায্য ঘোষণা করেছেন। আমফান পরবর্তী রাজ্যের পরিস্থিতির সমস্ত আপডেট:
রাত ৮টা: পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে কলকাতার রাজপথে নামলেন সেনা জওয়ানরা। রাজ্যে ৫ কলাম সেনা কাজ করবে।
সন্ধে ৬টা: করোনার চেয়েও বড় বিপর্যয় ঘূর্ণিঝড় আমফান। নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে আক্ষেপ করে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যবাসীকে জানিয়েছেন, একটু ধৈর্য ধরতে। প্রশাসন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করছে ফের সবকিছু স্বাভাবিক করতে।
বিকেল ৪.৫৪: আমফানের দাপটে বেলুড় মঠ চত্বরে প্রচুর গাছ উপড়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মঠের উদ্যানের একাংশ।
বিকেল ৪: রাজ্যে আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে প্রশাসনের তরফে। সেনা, বন্দর কর্তৃপক্ষ, রেলের সাহায্যের আবেদন করা হয়েছে। পানীয় জল পরিষেবা এবং নিকাশি ব্যবস্থায় দ্রুত কাজ চলছে। কাজের জন্য এই মুহূর্তে বেশি প্রয়োজন কর্মীদের। তাই বিভিন্ন দপ্তর থেকে কর্মী চাওয়া হয়েছে। NDRF’এর আরও ১০টি দলও চাইল নবান্ন। টুইট করে আবেদন জানিয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর।
GOWB mobilizes maximum strength in unified command mode on 24×7basis for immediate restoration of essential infrastructure and services asap. Army support has been called for;NDRF and SDRF teams deployed; Rlys,Port & private sector too requested to supply teams and equipment(1/3)
— HOME DEPARTMENT – GOVT. OF WEST BENGAL (@HomeBengal) May 23, 2020
দুপুর ৩.৪৫: গড়িয়ার ৪৫ নং বাস স্ট্যান্ডের কাছেও পথ অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখানেও দাবি জল, বিদ্যুৎ পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক করার।
দুপুর ৩.৩০: জল, বিদ্যুতের দাবিতে বারাকপুরের দেবপুকুরের কাছে পথ অবরোধ ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ। টিটাগড় থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়্ন্ত্রণ করতে না পারায় বারাকপুর কমিশনারেটের তরফে পাঠানো হয় RAF. সেই গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয়।
দুপুর ৩.১৪: রাজ্যের বিদ্যুৎ সরবরাহে প্রতিযোগিতা থাকা উচিত, মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠকে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ”আমিও চাই প্রতিযোগিতা থাকুক। আমাদের আমলে সিএসসিই দায়িত্ব পায়নি। কেন্দ্রীয় সরকার ওই বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিল।” তিনদিন ধরে শহর কলকাতায় বিদ্যুৎ না থাকায় সিইএসসি’র উপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা।
দুপুর ২.২৫: বিদ্যুৎহীন এলাকায় পানীয় জল সরবরাহে জেনারেটর ব্যবহারের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
দুপুর ২.১০: ‘একসঙ্গে চারটে সমস্যার সঙ্গে লড়ছি – করোনা, লকডাউন, পরিযায়ী শ্রমিক, আমফান’, প্রশাসনিক বৈঠকে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘সরকারের আয় নেই, এক লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। টাকা জোগাড়ের চেষ্টা করছি, মানুষের থেকে সাহায্য চাইব।’
দুপুর ২.০৫: ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল পড়ুয়াদের জন্য আলাদা প্যাকেজ করা হোক। যাতে তাদের নষ্ট হওয়া বই-খাতা-ব্যাগ-জুতো দেওয়া যায়। পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন জেলাশাসক।
দুপুর ১.৫৯: বিদ্যুতের খুঁটি সারিয়ে যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সংযোগ আনা প্রধান লক্ষ্য। উল্লেখ করে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, স্থানীয় ছেলেমেয়েদের কাজে লাগিয়ে দ্রুত গাছ সরিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করা হোক। ম্যানগ্রোভ অরণ্য পুনর্গঠনের দায়িত্ব নিক বন ও পরিবেশ দপ্তর।
দুপুর ১.৫৫: স্বাস্থ্য পরিষেবায় আরও জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানালেন, ORS এবং অ্যান্টি ভেনাম বেশি করে রাখতে হবে। এখানে কালাচ নামে একটি সাপ আছে। এক ছোবলেই শেষ করে দেয়, সতর্কবার্তা তাঁর। গোটা রাজ্যে ৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। শুধু দক্ষিণ ২৪পরগনাযতেই ক্ষতিগ্রস্ত ৭৩ লক্ষ মানুষ।
দুপুর ১.৫২: দুর্গত এলাকায় যৌথভাবে সমীক্ষা হবে। রাস্তায় পড়ে থাকা গাছ ১০০দিনের কাজে লোক নিয়োগ করে কাটাতে হবে। পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর।
দুপুর ১.৪৫: আমফান পরিস্থিতি মোকাবিলায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ভাল কাজ করেছে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের প্রশংসা করে ধন্যবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। বুলবুলের পর ফের এমন বড় বিপর্যয় সামলানো কঠিন, মানলেন মমতা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুনর্গঠনে অতিরিক্ত খরচ যেন না হয়। সতর্ক করলেন মমতা।
দুপুর ১.৪০: কাকদ্বীপ পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহকুমা শাসকের দপ্তরের শুরু আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১০ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, মুখ্যমন্ত্রীকে জানালেন জেলাশাসক।
দুপুর ১.২৫: সাগরদ্বীপ-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমফান বিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকা হেলিকপ্টার থেকে পরিদর্শন মুখ্যমন্ত্রীর। এরপর যোগ দেবেন কাকদ্বীপের প্রশাসনিক বৈঠকে।
দুপুর ১.২০: মমতার আবেদনেও কাজ হল না। ঠাকুরপুকুর-সহ একাধিক এলাকায় বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ। কাকদ্বীপ যেতে না পেরে ফিরে গেলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুপুর ১২.৫০: ‘একটু ধৈর্য ধরুন, বিদ্যুৎ পরিষেবা মিলবে। অযথা বিক্ষোভ না করে বিদ্যুৎ কর্মীদের কাজ করতে দিন।’ জেলায় জেলায় বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের কাছে আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর। আমফান বিধ্বস্ত এলাকা দেখতে কাকদ্বীপ যাওয়ার আগে তিনি জানান, করোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই বাড়ি চলে গিয়েছেন। কর্মী কম, তাই কাজে সময় লাগছে।
বেলা ১১.২০: উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের দাবিতে পথ অবরোধ স্থানীয় বাসিন্দাদের। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে বিক্ষোভ দমন করতে গেলে হামলার মুখে পুলিশ, চলল লাঠিচার্জ।
সকাল ১০.৫৭: ঘূর্ণিঝড় আমফান পরবর্তী সময় থেকে বিদ্যুৎ, জল কোনও পরিষেবাই মিলছে না। দক্ষিণ কলকাতার গড়ফা, সাঁপুইপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে সামিল তাঁরা।
সকাল ১০.৩৫: টানা তিনদিন নেই বিদ্যুৎ পরিষেবা। হেলদোল নেই বিদ্যুৎ দপ্তরের। অভিযোগ তুলে যাদবপুরের সুলেখা মোড় অবরোধ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তুমুল বিশৃঙ্খলা এলাকায়।
সকাল ১০: আমফান বিপর্যস্ত এলাকা বারুইপুরে ত্রাণ বিলি করতে যাওয়ার সময় বাধার মুখে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গড়িয়ায় তাঁকে আটকে দিল পুলিশ। ঢালাই ব্রিজের কাছে ব্যারিকেডের কাছে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তাঁর গাড়ি। পুলিশি বাধা পেয়ে ক্ষুব্ধ বিজেপি রাজ্য সভাপতি। প্রতিবাদে ক্যানিং রোড অবরোধ বিজেপি কর্মীদের।
সকাল ৯.৪৫: কলকাতা পুরসভার ১১৪ নং ওয়ার্ডে জল, বিদ্যুতের দাবিতে আজও বিক্ষোভ। রাস্তা অবরোধ করতে প্রতিবাদে নামলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্যাহত যান চলাচলও।
সকাল ৯.২৫: আজ আমফান বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রথমে বারুইপুরের দলীয় কার্যালয়ে যাবেন। সেখান থেকে গোসাবা ও ক্যানিংয়ের বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের কথা তাঁর। ত্রাণ বিলিও করতে পারেন তিনি।
সকাল ৮.৩০: আমফানের ঝাপটায় খানিক বিধ্বস্ত ওড়িশা উপকূলও। তবে ক্ষয়ক্ষতি বাংলার চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম।ঘুরে দাঁড়ানোর তোড়জোড় নবীন পট্টনায়েক সরকারেরও।
সকাল ৮: সুন্দরবনের আমফান বিধ্বস্ত এলাকা আকাশপথে পরিদর্শনের পর এদিন মুখ্যমন্ত্রী কাকদ্বীপে নেমে দেখা করতে পারেন মৃতদের পরিবারের সঙ্গে। সূত্রের খবর, তাঁদের হাতে রাজ্যের তরফে আর্থিক সাহায্যের চেক তুলে দেবেন।
সকাল ৭.৪৫: এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন শহর কলকাতার অনেকাংশ। জলসমস্যাও প্রকট। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিদ্যুৎ ফেরানোর কাজ চলছে। কোথাও কোথাও বিদ্যুতের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ। একই ছবি জলের জন্যও।
সকাল ৭.৩০: আমফানের দাপটে শহর কলকাতার অধিকাংশ গাছ ভূপতিত। মোটা গুঁড়িসমেত উপড়ে, ডাল ভেঙে আটকে গিয়েছে রাস্তা। সেসব গাছ সরিয়ে রাস্তা সাফ করা সময়সাপেক্ষ বলে পুরসভা সূত্রে খবর। তাই কাজ দ্রুত করতে পুরএলাকার প্রতিটি বরোর জন্য রাতারাতি লাখ টাকার করাত কেনার সিদ্ধান্ত পুরসভার।
সকাল ৭.২০: আজ দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ আমফান পরিস্থিতিতে উদ্ভূত সমস্যার মোকাবিলার পথ খুঁজতে কাকদ্বীপে মহকুমাশাসকের দপ্তরে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী সমাধান বেরয়, সেদিকে চোখ সুন্দরবনবাসীর।
সকাল ৭: দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় তছনছ হয়ে গিয়েছে আমফানের দাপটে। আজ বেলার দিকে বেহালা থেকে হেলিকপ্টারে উঠবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আকাশপথে পরিদর্শনের পর বৈঠক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.