দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। এই হল সুন্দরবনবাসীর জীবন। আর চলতি লোকসভা ভোটে সপ্তম দফায় সেখানেই ভোট৷ নির্ধারিত সময়ের অনেকটা আগেই সুন্দরবনে হাজির হয়েছেন ভোটকর্মীরা। কারণ একটাই৷ রাস্তা দুর্গম, যাতায়াতের সমস্যা।
সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের কুমিরমারী, ছোট মোল্লাখালি, সাতজেলিয়ার মত প্রত্যন্ত দ্বীপে মোট ২৫৭ টি বুথ রয়েছে। কিন্তু সেখানে যাওয়া তো বেশ ঝক্কির কাজ। দু’দিন আগে রওনা না হলে সঠিক সময়ে বুথে পৌঁছানো কার্যত অসম্ভব। তাই লঞ্চ, ভুটভুটিতে চেপে ইতিমধ্যেই নিজেদের বুথের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন ভোটকর্মীরা। শুক্রবার সকাল থেকেই সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের ডিসিআরসি সেন্টারে দেখা যায় মগরাহাট, জীবনতলা হয়ে নৌকোয় দলে দলে সেখানে পৌঁছেছেন ভোটকর্মীরা। কারও হাতে ভিভিপ্যাট, কারও হাতে ভোটের অন্যান্য সামগ্রী। সঙ্গে রয়েছে প্রচুর পুলিশ। সুষ্ঠ ভোট করাতে ইতিমধ্যে বুথে পৌঁছে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনী।ভোটকর্মীদের সুবিধার ব্যবস্থায় রয়েছে নৌকো বা ছোট গাড়ির। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে পানীয় জলের। রোদ থেকে বাঁচতে নির্বাচন কমিশনের তরফে ভোটকর্মীদের দেওয়া হয়েছে টুপি। পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসকের ব্যবস্থাও রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এ প্রসঙ্গে ভোটকর্মী সরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, “জলপথে এই প্রথম ভোট করাতে এসেছি। এ এক অন্য অভিজ্ঞতা। বিভিন্ন দ্বীপের নাম শুনেছি, এখন দেখলাম। তবে বাঘ, কুমিরের সঙ্গে রয়েছি, তাই ভয় রয়েছে। যদিও যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই এসেছি।” গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্রের কথায়, ” শুক্রবার রাতের মধ্যেই এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে পৌঁছাতে হবে ভোটকর্মীদের। এখন সব ভোট কর্মীরা যাতে সুস্থ ভাবে বুথে পৌঁছাতে পারে, তা দেখা আমাদের প্রধান লক্ষ্য।” শুধু ভোটের ব্যবস্থা করাই নয়, সেইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে বিভিন্ন দ্বীপের বুথে বুথে ওয়েব কাস্টিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে সময়ের আগেই বুথে পৌঁছাতে পেরে কিছুটা নিশ্চিত হলেও, কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত যেন পুরোপুরি স্বস্তি হচ্ছে না৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.