সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচনী আসরে নেমে পড়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। এখন থেকেই নির্বাচনী পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। রবিবার রাত থেকেই পাড়ায় পাড়ায় তাই চূড়ান্ত ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গিয়েছে। কেউ কেউ দেওয়াল লিখনের জন্য রবিবারই রঙের তুলি তুলে নিয়েছেন হাতে। আবার কেউ ভোটার তালিকা মিলিয়ে প্লাস-মাইনাসের অংক কষতে শুরু করে দিয়েছেন। পাড়ার কোন বাড়িটি হবে নির্বাচনী কার্যালয়, অনেক জায়গায় তাও এখন থেকেই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। তবে, এই সবকিছুতেই অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির থেকে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা।
আমতার জয়পুরে দেখা হল আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুশান্ত পাল শুরু করে দিয়েছেন দেওয়ালে তৃণমূলের প্রতীক চিহ্ন জোড়া ফুল আঁকার কাজ। তিনি জানান, এখনও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। তবে দল যাঁকেই প্রার্থী করুক না কেন দেওয়ালে প্রতীক এঁকে “এই চিহ্নে ভোট দিন” লিখে রাখা গেলে অনেকটা কাজ এগিয়ে থাকে। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর দেওয়ালে শুধু প্রার্থীর নামটা লিখে দিলেই চলবে।
সোমবার সকালে উদয়নারায়ণপুরে তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে বিধায়ক সমীর কুমার পাঁজাকে দলীয় কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী পরিকল্পনা প্রসঙ্গে আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন নির্বাচন ঘোষণার জন্যই নয়, অনেক আগে থেকেই তাঁরা নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। উদয়নারায়ণপুরে এখন উৎসবের মেজাজে ভোট হয়। তাই এখানে তৃণমূল কর্মী বা ভোটারদের মধ্যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনওরকম টেনশন থাকে না। হাওড়া গ্রামীণ জেলা এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের ‘মহাগুরু’ বলে পরিচিত গ্রামীণ জেলা সভাপতি পুলক রায় জানান, এখানে বিরোধীদের খুঁজতে অণুবীক্ষণ যন্ত্র লাগে। তা সত্ত্বেও তিনি কর্মীদের মানসিকতার মধ্যে কোনওরকম শিথিলতার অবকাশ রাখতে চান না।
[ বাঁধের লোহা চুরির অভিযোগ, বিপদের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা ]
উলুবেড়িয়া লোকসভার শেষ উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সাজদা আহমেদ পাঁচ লক্ষেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। সেই মার্জিন যাতে আরও বৃদ্ধি পায় দল সেই লক্ষ্যেই এগোবে। বাগনানের বিধায়ক অরুনাভ সেন জানান তাঁদের কর্মীরা অনেক আগে থেকেই দেওয়াল লিখনের জন্য অধিকাংশ দেওয়াল দখল করেছেন। শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য নয়, তৃণমূলের কর্মীরা সারা বছরই মানুষের সঙ্গে মানুষের পাশে থাকেন। তাই ভোট ঘোষণা হয়েছে বলে নতুন করে জনসংযোগের কিছুই নেই। তাঁর কাছে জনসংযোগটা একটা রুটিন মাফিক কাজ। ভোটারদের ভাল-মন্দের খোঁজ নেওয়াটা তাঁদের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।
এদিকে বিজেপির দখল করা দেওয়াল তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা জোর করে দখল করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুললেন বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক। তিনি বলেন যেসব জায়গায় বিজেপি কর্মীরা দেওয়াল লিখনের জন্য দেওয়ালে “সাইট ফর বিজেপি” লিখে রেখেছিলেন সেই দেওয়াল গুলি থেকে বিজেপি’র নাম মুছে দিয়ে তৃণমূল কর্মীরা দেওয়ালগুলি দখল করে নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে পুলক রায় বলেন পাঁচ লক্ষ ভোটে জেতা কোনও প্রার্থীর জন্য অন্যের দখল করা দেওয়াল কেড়ে নেওয়া হচ্ছে কথাটা যথেষ্টই হাস্যকর।
তবে আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে তৎপরতা দেখা গেলেও কোথাও কোথাও কয়েকটি কর্মী বৈঠক ছাড়া এখনও পর্যন্ত সিপিএম বা কংগ্রেসের মধ্যে দেওয়াল লিখনের জন্য সেরকম তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। বামফ্রন্ট-কংগ্রেস জোট এবং প্রার্থী ঘোষণার উপরে দেওয়াল লিখনের বিষয়টি নির্ভর করছে বলে ওই দুই দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
[ বারাকপুরে প্রার্থী হওয়া নিয়ে দীনেশ-অর্জুন কোন্দল, বিবাদ মেটাতে আসরে মমতা ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.