সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতিতে তাঁরা চরম প্রতিপক্ষ। বলতে গেলে দুই মেরুতে অবস্থান। একজন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরজন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু আদর্শগতভাবে যতই বিভেদ থাক সামনাসামনি দেখা হল পারস্পারিক সৌজন্য দেখানোটাই দস্তুর। শুরুটা তেমনই করেছিলেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামার আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন সংরক্ষতি অঞ্চলে। মোদি বীরভূমের মাটিতে পা রাখতেই উত্তরীয় পরিয়ে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার সেই সম্ভাষণ সাদরে গ্রহণ করেছিলেন মোদিও।
#WATCH PM Narendra Modi arrives in Shanti Niketan to attend the convocation of Visva Bharati University, received by West Bengal CM Mamata Banerjee pic.twitter.com/dnDE1pZmyf
— ANI (@ANI) 25 May 2018
কিন্তু তাল কাটল সমাবর্তন বক্তৃতায়। বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে বক্তব্য শুরু করলেন তাতে হয়তো খুব একটা খুশি হবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘বিশ্বভারতীর আচার্য হিসেবে আমি আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, এখানে আসার পথে আমাকে ছাত্ররা বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপযুক্ত পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। আচার্য হিসেবে এর দায় আমার উপরেই বর্তায়।’ ওয়াকিবহাল মহল অবশ্য বলছে, প্রধানমন্ত্রী উপর উপর যতই বিনয় দেখানোর চেষ্টা করুন, বক্তব্যের শুরুতে আসলে তিনি এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবস্থাপনাকে খোঁচা দিতে চাইলেন।
এখানেই শেষ নয়, এরপরও অরাজনৈতিক মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য রাখলেন তাঁর পরতে পরতে রাজনীতিরই গন্ধ পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। রবীন্দ্রনাথের বিশ্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরার ফাকেই নমো একে একে বর্ণনা করে ফেললেন তাঁর আমলে চালু হওয়া সরকারি প্রকল্পগুলির সুফল। প্রধানমন্ত্রী উজ্বলা যোজনা থেকে শুরু করে ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া সবই উঠে এল তাঁর বক্তৃতায়। বেশ তাৎপর্যপূর্ণভাবে তাঁর বক্তব্যে বারবার উঠে এল ২০২২-র কথা। সমাবর্তনে হাজির ছাত্রছাত্রীদের সমবেত মোদি মোদি স্লোগানের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনলে মনে হতেই পারে এটা কোনও রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চ- দেখুন ভিডিও
#WATCH Live from West Bengal: PM Narendra Modi speaking at the convocation of Visva Bharati University in #Santinik… https://t.co/3KTTVr6rIF
— ANI (@ANI) 25 May 2018
রাজনীতির যে এই শুরু তা কিন্তু নয়। বৃহস্পতিবারই দেশিকোত্তম প্রদান বাতিল হওয়া নিয়ে নাম না করে প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধেছিলেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। দেশিকোত্তম না দেওয়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে মমতা বলেছিলেন, ‘ বিশ্বভারতী রাজনীতির মঞ্চ নয়, যাদের দেশিকোত্তম পাওয়ার কথা তারা সকলেই রাজনীতির উর্ধ্বে।’ সমাবর্তন রাজনীতির সূচনাটা হয়ত সেখানেই হয়েছিল, মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.